হেফাজতে রামপাল।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু রামপালকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। আজ সকালে রামপালকে আদালতে পেশ করা হলে তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ। ২০০৬ সালে রোহতকে এক গ্রামবাসী খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল হিসারের বারওয়ালার এক আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা রামপালের বিরুদ্ধে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও এত দিন আত্মসমর্পণ করেননি তিনি। অবশেষে রামপালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। দু’দিন ধরে বিস্তর নাটকের পরে অবশেষে কাল রাতে তাঁর আশ্রম থেকেই ধরা হয় রামপালকে।
তবে গত দু’দিনে রামপালের গ্রেফতারি নিয়ে আশ্রমে যা যা ঘটনা ঘটেছে, তার প্রেক্ষিতে রামপালের বিরুদ্ধে আরও ৩৫টি নতুন মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। রামপালের ছেলে, ঘনিষ্ঠ সহকারী-সহ গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৪৬০ জনকে। তবে পুলিশ জানাচ্ছে, এখনও ওই আশ্রমের ভিতরে রামপালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা লুকিয়ে রয়েছে। তাদের না ধরা পর্যন্ত পুলিশ ও আধা সেনার যৌথ অভিযান শেষ হবে না বলে জানিয়েছে হরিয়ানা সরকার।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবারের হামলায় জড়িত কিছু ব্যক্তির ছবি হাতে এসেছে। তাদের গ্রেফতার করতে আশ্রমে ফের অভিযান শুরু হবে। আজ সকালে অবশ্য বেশ কিছু ভক্তকে আশ্রম ছেড়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তাঁদেরও অভিযোগ, রামপালের আশ্রমের নিরাপত্তারক্ষীদের ভয়েই এত দিন বাইরে বেরোতে পারেননি। ওই ভক্তদের আরও অভিযোগ, তাঁরা বাইরে বেরোলেই পুলিশ ধরবে বলে ভয় দেখানো হয়েছিল তাঁদের। তা ছাড়া, রামপালের নিরাপত্তারক্ষীরা মারধরের হুমকিও দিয়েছিল। যদিও আশ্রম প্রধান রামপাল নিজে আজ সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, এই সব অভিযোগ মিথ্যে। তিনি বা তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও ভক্তকেই জোর করে আশ্রমের মধ্যে আটকে রাখেননি। উল্টে রামপালের আইনজীবী আজ আদালতে দাবি করেছেন, ভক্তরাই তাঁর মক্কেলকে জোর করে আশ্রমে বন্দি করে রেখেছিলেন। আত্মসমর্পণ করতে দেননি। আজ পঞ্চকুলার সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় রামপালের। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
হরিয়ানা পুলিশের আইজি (হিসার) এ কে রাও আজ জানিয়েছেন, রামপালের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগগুলি তদন্ত করতে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে থাকবেন হিসারের এসপি সত্যেন্দ্রকুমার গুপ্ত। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে সিটকে এই মামলা সংক্রান্ত হলফনামা পেশ করতে হবে।