কর্মা পুজোয় মেতে রাঁচীবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।
ঢোল আর মাদলের শব্দে আখড়া জমে উঠেছে। নারী-পুরুষ একে অন্যের হাত ধরে নেচে চলেছেন ঢোল-মাদলের তালে। মাদলের তালে যেন নেশা লেগে যাচ্ছে দর্শকদেরও। অনেক দর্শকও তাই আখড়ায় উঠে নাচের দলের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন।
প্রকৃতির পুজো করম এই ভাবেই উদযাপন হচ্ছে পুরো ঝাড়খণ্ড জুড়ে। রাঁচীর বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে পুজোমণ্ডপ। করম পুজোর মণ্ডপকে বলা হয় আখড়া। প্রতিটি আখড়ারই মাঝে থাকে একটি গাছ। সেই গাছকেই পুজো করা হয়। শুধু পুজোই নয়, গাছ ঘিরে ধামসা মাদলের তালে চলে নাচগানও। করম অবশ্য শুধু প্রকৃতির পুজোই নয় এই পুজোয় বোন তাঁর ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করে। ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে।
আরও পড়ুন: রদবদলে বড় চমকের অঙ্ক
আরও পড়ুন: প্রশ্ন শুনলে রেগে যান মোদী, বিস্ফোরক বিজেপি সাংসদ
করম পুজো উপলক্ষে আজ সকাল থেকেই রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাইবাল অ্যান্ড রিজিওনাল ল্যাঙ্গোয়েজ বিভাগের নানা অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাইবাল ও রিজিওনাল বিভাগের প্রধান ত্রিবেনীনাথ সাহু বলেন, ‘‘আজ পৃথিবীতে সবথেকে বেশি বিপন্ন প্রকৃতি। মানুষ নির্বিচারে গাছ কাটছে। উষ্ণায়নের জেরে হিমবাহের বরফ গলছে। তাই প্রকৃতির পুজো করম উৎসব আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক। তাই এ শুধু আদিবাসীদের উৎসবই নয়, এই উৎসব সবার।’’
রাঁচী থেকে আর্যভট্ট খানের প্রতিবেদন
রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাইবাল অ্যান্ড রিজিওনাল ল্যাঙ্গোয়েজের কুরুক, হো, খোরঠা, মুন্ডাই, নাগপুরি ভাষা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা একে একে আখড়ায় উঠে শুরু করলেন নাচগানের অনুষ্ঠান। আখড়ার গাছ ঘুরে ঘুরে গাছ মাদলের তালে পা মেলালেন ছাত্রছাত্রীরা। কুরুক ভাষায় তাদের গান, মুণ্ডাই ভাষায় তাদের গানের অর্থ হয়তো সবাই বুঝতে পারছিলেন না, তবে তাঁরা যে প্রকৃতি বন্দনা করছেন তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল না কারও। প্রকৃতিকে রক্ষা করার আর্তি বার বার ফুটে উঠছিল গানের মাধ্যমে তাঁদের শরীরী ভাষায়।
শুধু রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, রাঁচীর প্রধান রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলিতেও আখড়া তৈরি করে চলেছে করম উৎসব। আখড়া আলোয় আলোয় সেজে উঠেছে। সারারাত চলবে প্রকৃতির পুজো, সঙ্গে নাচগান-খাওয়াদাওয়া।