প্রতীকী ছবি।
এক পা পিছিয়েও দু’পা এগোতে চাইছে মোদী সরকার। চাপের মুখে ‘ভুয়ো’ খবর নিয়ে নির্দেশ প্রত্যাহার করলেও স্মৃতি ইরানির মন্ত্রকের কোপে পড়ল সাংবাদিকদের ঘর।
দিল্লিতে ন্যাশানাল মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ ঘরটি দখল করে আজ থেকেই কাজ শুরু হয়েছে নতুন ‘ক্রেশ’ তৈরির। সেখানে বাচ্চাদের থাকার বন্দোবস্ত হচ্ছে। গত কালের পর আজ সাংবাদিকরা তাই নিয়ে ফের প্রতিবাদ জানান। তাঁদের বক্তব্য, ১০ ফুট বাই ২০ ফুটের একটি বন্ধ ঘরে বাচ্চাদের রাখা হলে, সেটি সাংবাদিকদের থেকেও শিশুদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, স্মৃতি ইরানির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘যুদ্ধে’ নেমেছে। মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ বারে বিষয়টি উত্থাপন করতে চান সাংবাদিকদের একাংশ।
বিজেপিরই প্রাক্তন মন্ত্রী অরুণ শৌরি অভিযোগ করেছেন, আসলে যে ভুয়ো খবরের অভিযোগে মোদী সরকার সাংবাদিকদের উপরে আরোপ করতে চাইছে, সেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই ভুয়ো কার্যকলাপ জড়িয়ে পড়ছে। মাস কয়েক আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে লোকসভার স্পিকারের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মাসিক রেডিও বার্তা ‘মন কি বাত’-এর একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। শৌরির অভিযোগ, ‘‘সেই বইটি যে রাজেশ জৈনের লেখা বলে বলা হয়েছে, তিনি নিজে জানিয়েছেন সে’টি লেখেননি।’’ গত লোকসভায় মোদীর প্রচারের কাজে যুক্ত জৈন দাবি করেছেন, তাঁর নাম জোর করে বইয়ে দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেস আজ বলে, আসলে দেশে ‘ভুয়ো খবর’-এর কারখানা চালায় বিজেপিই। মন্ত্রী থেকে নেতারা একের পর এক ভুয়ো খবর প্রচার করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সে সব। এখন পায়ের নীচে জমি সরতে দেখে তাঁরা সাংবাদিকদেরও বেড়ি পরাতে চান। কাল সাংবাদিকদের শাস্তির বিধান দেওয়ার নির্দেশ প্রত্যাহার করা হলেও রাতে প্রেস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি জারি হয়েছে, তাতে অনেকটা স্মৃতিরই সুর। সেই প্রেস কাউন্সিলের সদস্যও কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিংহ, যিনি সম্প্রতি ‘পোস্টকার্ড নিউজ’-এর সম্পাদক মহেশ হেগড়েকে সমর্থন করেছিলেন। মহেশকে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কিন্তু বিজেপিও ছেড়ে কথা বলছে না। কাল সভায় অনেক সাংবাদিক অভিযোগ ছিল, সরকারিতন্ত্রে বসে যাঁরা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছেন, তাঁদের ‘নাম করে লজ্জায় ফেলতে’ (নেম অ্যান্ড শেম) হবে। সাংবাদিকদের আগেই আজ বিজেপি সেই কাজটি শুরু করে। প্রকাশিত কিছু খবর চিহ্নিত করে আজ বিজেপি সাংবাদিকদের ‘নেম অ্যান্ড শেম’ করেছে।