রং চটছে গেরুয়ার

যে ভোটকেন্দ্রটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন, সেই কৈরানার হিসাবই সামনে রাখছেন বিশ্লেষকরা। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ অধ্যুষিত এই কৈরানায় ৫০.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

ছবি: পিটিআই।

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রগুলির উপনির্বাচনে ১৩-২ স্কোরলাইনটি নিঃসন্দেহে বিজেপির পক্ষে অস্বস্তির। কিন্তু ২০১৯-এর নির্বাচনের আগে উপনির্বাচনের এই ফল, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে আরও একটি কারণে। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন রাজ্যের আসনগুলিতে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ক্ষয় ধরেছে।

Advertisement

যে ভোটকেন্দ্রটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন, সেই কৈরানার হিসাবই সামনে রাখছেন বিশ্লেষকরা। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ অধ্যুষিত এই কৈরানায় ৫০.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। যদি এই ভোট ধরে রাখতে পারা যেত, তবে সব বিরোধী দল একজোট হয়েও বিজেপিকে হারাতে পারত না। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর এবং ফুলপুরের মতোই কৈরানাতেও যে বিজেপি-বিরোধী হাওয়া বইছে, ভোটের খাতায় তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই উপনির্বাচনে বিজেপির ভোট নেমে এসেছে ৪৬.৫ শতাংশে।

মহারাষ্ট্রের দু’টি লোকসভা আসন, পালঘর এবং ভান্ডারা গোন্ডিয়ায় বিজেপি ভোট কমার হারও চোখে পড়ার মতো। পালঘরে ৮ এবং ভান্ডারা গোন্ডিয়ায় প্রায় ২৩ শতাংশ ভোট কমেছে গেরুয়া বাহিনীর। তবে ২০১৪ সালে বিজেপি এই কেন্দ্র দু’টিতে লড়েছিল শিবসেনার সঙ্গে একজোটে। এবারে আলাদা লড়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে শুধু বিজেপির ভোট কতটা কমেছে, তা নিখুঁত ভাবে তুলে ধরাটা একটু সমস্যা। তবে যেটা স্পষ্ট, তা হল ভান্ডারা গোন্ডিয়ায় কংগ্রেস-এনসিপি জুটির ভোট শতাংশ ২০১৪-র তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ।

Advertisement

এগারোটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট শতাংশের হিসাব কষলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজেপির পতনের ছবিই ধরা পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের মহেশতলায় অবশ্য নিজেদের ভোট-ভাগ বাড়িয়ে সিপিএমকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ব্যতিক্রম উত্তরপ্রদেশের নূরপুরও। এখানে ভোট-ভাগের হার অনেকটাই বাড়িয়েছে বিজেপি। গত বার পেয়েছিল ৩৯ শতাংশ ভোট। এ বারে ৪৭.২ শতাংশ। তবু বিরোধীদের মিলিত শক্তিকে হারানোর জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।

উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের মতো বড় রাজ্যের বাইরেও বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ক্ষয় নিয়ে দলের মধ্যে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। কেরলের চেঙ্গান্নুর বিধানসভা আসনে ২০১৬ সালের ভোটে ২৯.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এ বার তা কমে হয়েছে ২৩.২ শতাংশে। সেখানকার নায়ার সম্প্রদায়ের মধ্যে দলের পোক্ত ভিত থাকার কারণে আরও কিছুটা ভাল ফলের আশায় ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পুরনো ভোটাররাও সরে যাচ্ছেন। বেঙ্গালুরুর রাজরাজেশ্বরী নগরে ভোট স্থগিত রাখতে হয়েছিল হাজার দশেক ভোটার কার্ড উদ্ধার নিয়ে চাপান-উতোর ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটারদের মধ্যে নগদ টাকা বিলির অভিযোগ ওঠায়। পরে ভোট হয় সেখানে। ফল বলছে, বিজেপির কমে ভোট শতাংশ বেড়েছে কংগ্রেসের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন