দীর্ঘ ব্যবধানের পরে আজ নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নগাঁওয়ের চার বারের সাংসদ রাজেন গোঁহাই। প্রায় দুই দশক আগে, দেবগৌড়া সরকারের আমলে, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন নগাঁওয়ের সাংসদ মুহিরাম শইকিয়া। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে কেন্দ্রের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সর্বানন্দ সোনোয়াল। তাঁর জায়গায় অসমের একজনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত ছিল। কিন্তু রাজেনবাবুর পথ নিষ্কন্টক ছিল না। চা-জনগোষ্ঠীর সাংসদ রামেশ্বর তেলি, কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা, মঙ্গলদৈয়ের তিন বারের সাংসদ রমেন ডেকারা দৌড়ে ছিলেন। তার উপর, সদ্য চাংসারিতে ‘এইমস’ গড়া নিয়ে রহায় আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খোলাখুলি লড়াইয়ে নেমেছিলেন গোঁহাই। কিন্তু গত কাল সন্ধ্যায় রাজেনবাবুর মন্ত্রিত্ব নিশ্চিত হয়। শুধু চার বারের সাংসদ হওয়াই নয়, আহোম সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়ার বিষয়টিও রাজেনবাবুর মন্ত্রী হওয়ার পিছনে কাজ করেছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। ১৯৯১ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ৬৫ বছর বয়সী রাজেনবাবু ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রদেশ বিজেপির সভাপতি ছিলেন। গত বিশ বছর ধরে রাজ্যে বিজেপির ধার বা ভার না থাকলেও রাজেনবাবু কিন্তু টানা চার দফা নগাঁও কেন্দ্র ধরে রেখেছেন। রাজ্যে বিজেপির পতাকা টিঁকিয়ে রাখায় তাঁর ভূমিকা তাই অনস্বীকার্য। চার বারের সাংসদ হয়েও রাজেনবাবু কখনওই সে ভাবে সংবাদ শিরোনামে আসেননি। কিন্তু সম্প্রতি রহাকাণ্ডে নিজের দলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই তিনি ‘খবর’ হন। এবারের বিধানসভা ভোটে বিজেপির জয়ের পিছন অন্যতম মূল কাণ্ডারী ছিলেন কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তাঁকে বিজেপিতে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক নেতারই আপত্তি ছিল। কিন্তু পেশায় আইনজীবী রাজেনবাবু বরাবর হিমন্তকে দলে টানার পক্ষে ছিলেন। বলেছেন, ‘‘হিমন্ত এলে বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা।’’ সে কথাই সত্যি হয়। গোঁহাই শপথ নেওয়ার পরে বলেন, ‘‘আমার উপরে আস্থা রাখায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রীয় সভাপতি অমিত শাহকে ধন্যবাদ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের চাহিদা মেটাতে যথাসাধ্য করব। রাজ্যের বিভিন্ন সমস্যা কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরব।’’