Republic Day 2023

প্রজাতন্ত্র দিবসে অগ্নিবীর, নারীশক্তির জয়গানও

১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ২৩টি ট্যাবলো আজ অংশ নিয়েছিল শোভাযাত্রায়। ভারতীয় সেনাশক্তি, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই ছিল অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৩
Share:

কর্তব্যপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

বেশ কয়েকটি ‘প্রথম’-এর সাক্ষী রইল দেশের ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান।

Advertisement

রাজধানীর চিরপরিচিত রাজপথ এ বার নাম বদলে কর্তব্যপথ হয়েছে। সেই কর্তব্যপথে এ বারই প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় নৌসেনার কুচকাওয়াজে প্রথম বার অংশ নিলেন ন’জন অগ্নিবীর। যাঁদের মধ্যে তিন জন মহিলা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সীমিত মেয়াদে সেনায় নিয়োগের অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। ক্ষোভের আগুনে পুড়েছিল বাস, ট্রেন। সেই নিয়োগের প্রকল্পভুক্ত ন’জনকে এ দিন সেনার কুচকাওয়াজে অংশীদার করে বিরোধী ও বিক্ষুব্ধদের বিজেপি সরকার রাজনৈতিক ভাবে জবাব দিতে চাইল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে।

এ দিন প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বছরের অনুষ্ঠান জুড়ে নারীশক্তিরও জয়জয়কার। কুচকাওয়াজে এই প্রথম অংশ নিয়েছিল বিএসএফের উট-সওয়ার মহিলা বাহিনী। রাজস্থান ফ্রন্টিয়ার এবং বিকানের ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষিত এই বাহিনী শুধু ভারত নয়, বিশ্বের প্রথম মহিলা উট-সওয়ার সেনাদল। সিআরপি-র সশস্ত্র মহিলা বাহিনীকেও দেখা গেল প্রথম বার। সেনাশক্তির প্রদর্শনে যোগ দিয়েছিল দিল্লি পুলিশের মহিলা ব্যাটেলিয়ন। কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিল মহিলা সেন্ট্রাল রিজ়ার্ভ পুলিশও। সম্প্রতি পরমবীর চক্র জয়ী মেজর শয়তান সিংহ ভাটির নামে আন্দামান নিকোবরের একটি দ্বীপকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁর নাতনি ডিম্পল সেনার মোটরসাইকেল দলের কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

Advertisement

এ দিন রাজধানীর কর্তব্যপথে আত্মনির্ভর ভারতের বার্তা দিতে দেশে তৈরি সমরাস্ত্র প্রদর্শনের উপরে জোর দেওয়া হয়। এত দিন রাষ্ট্রপতিকে স্যালুট জানাতে ব্রিটিশ আমলের তৈরি ২৫ পাউন্ডার বন্দুক থেকে ২১ বার তোপধ্বনি করা হত। এ বার তার জায়গায় স্থান পেল ভারতে তৈরি ১০৫এমএম ফিল্ডগান। কর্তব্যপথে কলাকৌশল দেখাল সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হেলিকপ্টার ‘প্রচণ্ড’, ভারতীয় ট্যাঙ্ক ‘অর্জুন’। ছিল স্বয়ংক্রিয় যাত্রিবাহী ড্রোন ‘বরুণ’। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি, ভূমি থেকে আকাশে ছোড়া যায় এমন ক্ষেপণাস্ত্র ‘আকাশ’ও ছিল অনুষ্ঠানে। কুচকাওয়াজে সেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনে নেতৃত্ব দিয়েছেন লেফটেন্যান্ট চেতনা শর্মা।

১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ২৩টি ট্যাবলো আজ অংশ নিয়েছিল শোভাযাত্রায়। ভারতীয় সেনাশক্তি, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই ছিল অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। নাচে-গানে সাংস্কৃতিক

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ৪৭৯ জন শিল্পী। এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবেদল ফতেহ অল-সিসি। এই প্রথম প্রথা ভেঙে মিশরীয় সেনাবাহিনীর একটি দল প্রজাতন্ত্র দিবসে কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। দলটিতে ১৪৪ জন সদস্য ছিলেন। অংশ নেয় মিশরীয় সেনাবাহিনীর ১২ সদস্যের একটি ব্যান্ড-ও। এ বার প্রথম ভিআইপি বক্সে স্থান পেয়েছিলেন নতুন সংসদ ভবন, কর্তব্যপথ নির্মাণে যুক্ত শ্রমিকদের পরিবার, আনাজওয়ালা, দুধবিক্রেতা, ফেরিওয়ালারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন