শুধু অর্ডারের অপেক্ষা, এ বার ড্রোনে করে পৌঁছে যাবে আপনার চা

হাতিয়ার ড্রোন, আর একটি ট্যাব। বিক্রম জানালেন, তাঁদের এই ড্রোন ২ কিলোগ্রাম ওজনের জিনিস ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০৩:০৪
Share:

গরমাগরম: লখনউয়ে চা-ওয়ালা ড্রোন।

এ যেন ভূতের রাজার বর! চাইলেন, আর উড়তে উড়তে চলে এল চা। ধোঁয়া-ওঠা, একদম গরমাগরম।

Advertisement

দু’জনের হাততালিও লাগবে না। মোবাইলে আঙুল নেড়ে একাই অর্ডার দেওয়া যাবে অনলাইনে। আর তার পরেই দেখবেন ছোটু বা রামু নয়, ড্রোন এসে পৌঁছে দিচ্ছে চা। তা সে বেড-টি হোক, বা অফিস-ফেরত ক্লান্তি কাটানোর টনিক। নবাবের শহর লখনউয়ে এমন ‘মেজাজি কারবার’ এই শুরু হল বলে।

গত কাল এর ছোট্ট একটা ‘ডেমো’ দিলেন আইআইটি কানপুরের প্রাক্তনী বিক্রম ও তাঁর বন্ধুরা। লখনউয়ের একটি খাবার সরবরাহকারী স্টার্ট-আপ সংস্থার হয়ে আকাশপথে পৌঁছে দিলেন গরম চায়ের টেট্রা প্যাক। হাতিয়ার ড্রোন, আর একটি ট্যাব। বিক্রম জানালেন, তাঁদের এই ড্রোন ২ কিলোগ্রাম ওজনের জিনিস ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।

Advertisement

তিন বছর ধরে ড্রোন বানাচ্ছেন বিক্রমরা। সম্প্রতি আট বন্ধু মিলে তাঁরা একটি সংস্থাও খুলে ফেলেছেন লখনউয়ে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং তেলঙ্গানা সরকারের হয়ে কাজ করে তাঁদের সংস্থাটি। কিন্তু হঠাৎ ‘চায়ে পে চর্চা’ কেন? বিক্রম জানালেন, সম্প্রতি তাঁদের এই প্রস্তাব দেয় শহরের ফুড স্টার্ট-আপ সংস্থা। বলা হয়, শহরের যানজট এড়িয়ে ড্রোনে করে গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে গরম চা। কিন্তু বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি মিলবে তো! যদি মেলে, চায়ের সঙ্গে হয়তো ড্রোনে টা-ও পাওয়া যাবে!

গ্রাহকের ঠিকানায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে প্রথম ভেবেছিল মার্কিন ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন। ২০১৩-য়। এর ঠিক দু’বছরের মাথায় প্রতিযোগিতায় নামে চিনা সংস্থা আলিবাবা। সাংহাই, বেজিং এবং গুয়ানঝাউ শহরে ড্রোনে করে চা পাঠাতে শুরু করে তারা। তবে নেহাতই টি-ব্যাগ। কিন্তু গরম জলের ঝক্কি মেটাবে কে? বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই প্রশ্নেই সে বার মাঠে মারা যায় আলিবাবার চমক দেওয়া চেষ্টা। এ দিকে নিরাপত্তার প্রশ্নে অ্যামাজনের ড্রোন-অভিযান এখনও পুরোপুরি বৈধতা পায়নি মার্কিন মুলুকে।

তাই এ ভাবে ভারতের ‘চা-ওয়ালা ড্রোন’ আমেরিকা-চিনকেও টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। লখনউয়ের ওই স্টার্টআপ সংস্থাটি জানিয়েছে, শহরের প্রায় ১৫০টি রেস্তরাঁ থেকে তারা খাবার পৌঁছে দেয় গ্রাহকের বাড়ি-বাড়ি। ডেলিভারি বয় আছে দেড়শোরও বেশি। তবু বাগড়া দিচ্ছে শহরের যানজট। সব বড় শহরেরই এক হাল। আজকাল অনেক সময় অর্ডার দেওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে পিৎজাও মিলছে না। এর সমাধানে ‘উড়ন্ত’ বার্গার আনার কথা ভাবা হচ্ছে বলে চলতি মাসের গোড়ায় জানিয়েছিল আমেরিকার একটি সংস্থা। নবাবের শহরে গরম চায়ের পেয়ালা উড়ে এল তাদেরও আগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন