লক্ষ্মীপুর পুরসভাও কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে চলেছে।
উপ-সভাপতি পুলকজ্যোতি দাস কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য পদে ইস্তফা দিয়েছেন। গত নির্বাচনে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ১০ আসনের পুরসভায় বিজেপি জেতে ৫টা আসনে। কংগ্রেস ৪টিতে। তখন পুলকজ্যোতিকে নিয়ে উভয় পক্ষে চলে টানাটানি। উপ-সভাপতির পদ তাঁকে দিয়ে শেষ হাসি হাসে কংগ্রেস।
সভাপতি হন রিমি পাল। কিছুদিন পর পুলকবাবুকে শহর কংগ্রেসের সভাপতি পদেও নিযুক্ত করা হয়।
এখন পুলকবাবুর অভিযোগ, রিমিদেবীর সঙ্গে কাজ করা যায় না। স্বাধীনভাবে কিছুই করার সুযোগ নেই। ফলে উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়েছে। এখনই তাদের সঙ্গ ত্যাগ না করলে ভোটের সময় দায় বইতে হবে। তাই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সঙ্গে শহর কমিটির সভাপতি ও প্রাথমিক সদস্য পদে ইস্তফা দেন তিনি। একাংশ নেতার বাড়াবাড়ির কথাও এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন। বেশ কিছুদিন থেকেই চলছিল লক্ষ্মীপুর পুরসভার সভাপতি ও উপসভাপতির এই দ্বন্দ্ব। ৫ জানুয়ারি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপকুমার দে-র কাছে ইস্তফার চিঠি পাঠান পুলকবাবু। সে কথা জেনে বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা তাঁকে ডেকে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় প্রদীপবাবু কাল চিঠি পাঠিয়ে পুলকজ্যোতি দাসকে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়েছে।
এখন পুলকবাবুর বিজেপিতে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এর পরও পুরসভা থেকে কংগ্রেসকে হটানো সম্ভব না-ও হতে পারে, এই আশঙ্কায় বিজেপি আরেক কংগ্রেস সদস্য সঙ্গীতা গুরুঙের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছে। সঙ্গীতাদেবীকে স্বদলে টানা গেলে কংগ্রেসের শক্তি তিনে ঠেকবে। বিজেপি সাত। সে ক্ষেত্রে পদাধিকারবলে সদস্য কংগ্রেস সাংসদ, বিধায়কের ভোট ধরেও পুরসভা দখলে রাখা সম্ভব হবে না।
রিমি পাল অবশ্য পুরবোর্ড ভাঙার আশঙ্কা খারিজ করে দেন। তিনি সঙ্গীতা গুরুঙের দল ছাড়ার অনুমানকে অহেতুক বলে উল্লেখ করেন। রিমিদেবীর হিসেব, পুলকবাবুর ইস্তফার দরুন সাংসদ, বিধায়কের ভোট নিয়ে ৬জন তাঁর পক্ষে রয়েছেন। বিজেপি বোর্ড গড়তে হলে এর বেশি সংখ্যক সদস্যের সমর্থন দেখাতে হবে।
বিজেপি নেতারা মুখ খুলতে চাইছেন না। শুধু জানিয়েছেন, গত শনিবার তাঁদের একটি সভা হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছে, বোর্ড ভেঙে গেলে তাঁরা দাবি জানাবেন।