পরিবেশ বাঁচাতে ভরসা পুরনো শাড়ি! বার্তা তিরুঅনন্তপুরমের জেলাশাসকের

কেরলের বরকলা পুরসভার উদ্যোগে বেশ কিছু পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস তাঁদের ভাণ্ডারে জমা দেওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে জানান বাসুকীরা। শাড়ি-জামার মতো জমা হয়ে ফ্রিজ, ল্যাপটপ থেকে রান্নাবান্নার সামগ্রীও।

Advertisement

অন্বেষা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৯
Share:

কে বাসুকী

লাল সিন্থেটিক শাড়িতে ঝকঝকে একটা মুখ। বলছেন, ‘‘এটা একটা পুরনো শাড়ি। ‘রিসোর্স রিকভারি ফেসিলিটি’ থেকে নিয়েছি। এটা আমি আরও দশ বছর তো পরবই!’’ ভিডিয়োটা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করছিলেন তিরুঅনন্তপুরমের জেলাশাসক কে বাসুকী। পরিবেশ রক্ষায় কিছু জিনিসের পুনর্ব্যবহার নিয়ে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই সে ভিডিয়ো সাড়ে ১৫ হাজারের কাছাকাছি মানুষ লাইক করেছেন। শেয়ার করেছেন অন্তত সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি লোক।

Advertisement

কেরলের বরকলা পুরসভার উদ্যোগে বেশ কিছু পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস তাঁদের ভাণ্ডারে জমা দেওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে জানান বাসুকীরা। শাড়ি-জামার মতো জমা হয়ে ফ্রিজ, ল্যাপটপ থেকে রান্নাবান্নার সামগ্রীও। সবগুলিই পুরনো, কিন্তু ফেলে দেওয়ার মতো নয়। কারও প্রয়োজন মিটল, সেগুলো ফের ব্যবহারও হল— এমন চেষ্টা কান্নুরেও হয়েছে বলে শুনেছিলেন বাসুকী। গত বছর তিরুঅনন্তপুরমের জেলাশাসক হওয়ার পরে আরও উৎসাহী হন।

মেয়ের জন্যও এক বার ‘রিসোর্স রিকভারি ফেসিলিটি’ থেকে পুরনো জামা সস্তায় কিনেছেন। ফোনে বললেন, ‘‘সেটা পরাতেও দ্বিধা ছিল না। এক বছর ধরে ও পরছে।’’ বাসুকীর মতে, ‘‘পুরনো জিনিস ফের ব্যবহার করতে গিয়ে যেটা হয়েছে, এখন একান্ত দরকার ছাড়া কিছু কিনি না। এক সময় কিছু না ভেবেই অকারণ কেনাকাটার অভ্যেস ছিল।’’ শাড়ির ব্যাপারটাও তাই। কাজের জায়গায় বেশির ভাগ দিনই মায়ের পুরনো শাড়ি পরে যান। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে তাই তো হয়। ভাল শাড়ি বহু দিন পরলেও ছেঁড়ে না, তা বলে সেটা ফেলে দেব?’’

Advertisement

চেন্নাইয়ে জন্ম আর বড় হওয়া। ডাক্তারি নিয়ে পড়লেও পরিবেশ রক্ষা নিয়ে মাথাব্যথা বহু দিনের। ৩৫-এর তরুণী বলেন, ‘‘বুঝেছিলাম, মানুষের মনের গভীরে বিষয়টা না ঢুকলে হাজার প্রকল্প করেও লাভ নেই।’’ জেলাশাসক হয়ে সেই কাজে মন দেন বাসুকী। পরিবার থেকে গোটা শহর— বোঝান সবাইকে। হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আমার সাত বছরের মেয়ে দোকানে গেলে উল্টোপাল্টা বায়না করে না। ও জানে, কী দরকার আর কী নয়!’’ পাঁচ বছরের ছেলে এখনও ততটা বোঝে না। তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার যে ঠিক নয়, তা মাথায় ঢুকে গিয়েছে। তাই তার আবদার, ‘‘আম্মা স্টিলের খেলনা দাও!’’ অন্য পুরসভাও এ ভাবে সক্রিয় হোক— চান বাসুকী।

আরও পড়ুন: শবরী নিয়ে অবস্থান বদলালেন রাহুল

গত বছর কেরলের বন্যার ছবিটা মনে গেঁথে গিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘প্রাথমিক কারণ যা-ই হোক, আসলে পরিবেশ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক উদাসীনতাই দায়ী। বাচ্চাদের এর পরে কী দেখাব আমরা? মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু পরিবেশ নিয়ে ভাবা শুরু করেছে। আমরা কবে ভাবব?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement