ছবি- সংগৃহীত
অম্বুবাচীর কামাখ্যা মন্দির মানেই নাগা সন্ন্যাসীদের আখড়া। তাঁদের হুঙ্কার, গাঁজার দম, কখনও আশীর্বাদ—কখনও কোপানলে জমজমাট থাকে কামাখ্যা চত্বর। কিন্ত গত বছর থেকে কামাখ্যা মন্দির চত্বর 'তামাক বর্জিত এলাকা' হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। আর এ বারের মেলায় মন্দির চত্বরে 'দৃশ্যদূষণ' ঠেকাতে নাগা সন্ন্যাসীদের ঘাঁটি গাড়ায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিল মন্দির কমিটি।
আরও পড়ুন- ভিক্ষুকদের পাশে দাঁড়াতে লাভজনক চাকরি ছেড়ে দিলেন এই ইঞ্জিনিয়র
২২ থেকে ২৬ জুন বসবে এ বারের অম্বুবাচী মেলা। প্রশাসনের অনুমান, অন্তত লাখ ছয়েক পা পড়বে নীলাচল পাহাড়ে। কামাখ্যার প্রধান পুরোহিত পবীন্দ্র প্রসাদ শর্মা দলৈ জানান, দেশ ও বিদেশের প্রচুক পর্যটক ওই সময় কামাখ্যা আসেন। ধর্মের নামে নগ্ন সন্ন্যাসীদের ঘিরে যে সব কাণ্ড চলে— তাতে সপরিবারে আসা অনেকেই অস্বস্তিতে পড়েন। তাই এ বার থেকে মূল মন্দির চত্বরে নয়, নাগা সাধুদের জন্য পশ্চিম দিকে অভয়ানন্দ আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। নগ্ন সন্ন্যাসীদের মিছিলও করতে দেওয়া হবে না। নাগা সাধুদের আখড়ায় যে ভাবে মদ ও মাদক সেবন চলে, তাতেও রাশ টানতে চাইছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
অসম পর্যটনের চেয়ারম্যান জয়ন্তমল্ল বরুয়া জানান, ভক্তদের জন্য এ বার নাহারবাড়ি, বংশীবাগান, অভয়ানন্দ আশ্রম, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির ও কামাখ্যা হাইস্কুল চত্বরে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। সোনারাম ফিল্ডে বসবে ধর্মালোচনা ও ভজনের আসর। গান পরিবেশন করবেন অনুপ জালোটা, অনুরাধা পোডওয়ালরা।
এ বছর বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে উচ্চবিত্ত শ্রেণীর পর্যটকদের উপরে। ব্রহ্মপুত্রে বিলাসবহুল লঞ্চ 'মহাবাহু' ভাড়া করা হয়েছে বিদেশি ও ধনী পর্যটকদের ঘোরানোর জন্য। তা থাকবে পাণ্ডু ঘাটে। 'মহাবাহু'র ভিতরে পাঁচতারা মানের ২৩টি রুম রয়েছে। পাঁচতারা তাঁবুগুলি থাকবে ভূতনাথ শ্মশানে চক্রেশ্বর মন্দিরের কাছে।
পাশাপাশি, এই বছর প্রথাগত গাড়ি ওঠার রাস্তা ছাড়াও 'দশ মহাবিদ্যা পথ' ও 'মেখেলা উজোয়া পথ' (রাজা নরকাসুর এক রাতের মধ্যে এই রাস্তা তৈরি করেন বলে কথিত) দু'টিকেও পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি মেলা চত্বরে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার দিকে বিশেষ জোর দিতে বলেন। মেলার সময় ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা ও মন্দির চত্বরে বিদ্যুৎ সরবরাহ অবিরাম রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন সোনোয়াল।