কলেজিয়ামে বিরক্ত বিচারপতি লোকুর

গত বছর জানুয়ারিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে যে চার প্রবীণ বিচারপতি মুখ খুলেছিলেন, তার মধ্যে বিচারপতি লোকুরও ছিলেন। এক বছরে পরে তাঁর মূল্যায়ন, ওই সাংবাদিক সম্মেলনের পরে গোটা ব্যবস্থায় কিছুটা খোলা হাওয়া ঢুকেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

ফাইল চিত্র।

কলেজিয়ামে ডিসেম্বর মাসে সিদ্ধান্ত হলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। জানুয়ারিতে সেই সিদ্ধান্তই পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে এই প্রথম মুখ খুলে বিরক্তি প্রকাশ করলেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মদন বি লোকুর।

Advertisement

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি লোকুর আজ বলেন, ‘‘আমি বিরক্ত। কারণ এক বার কোনও সিদ্ধান্ত হলে তা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়াটাই রীতি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।’’ কলেজিয়াম ব্যবস্থা আরও শোধরানো দরকার বলে আজ মন্তব্য করেছেন বিচারপতি লোকুর।

১২ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম বিচারপতি প্রদীপ নন্দরাজোগ ও বিচারপতি রাজেন্দ্র মেননকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে সুপারিশ করেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ হয়নি। বিচারপতি লোকুর ওই কলেজিয়ামের সদস্য ছিলেন। তিনি ডিসেম্বরের শেষে অবসর নেওয়ার পরে, কলেজিয়ামে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র।

Advertisement

জানুয়ারিতে কলেজিয়াম আগের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বদলে অন্য দুই বিচারপতির নাম সুপারিশ করে। তা নিয়েই বিতর্ক হয়। প্রধান বিচারপতি গগৈ কলেজিয়ামে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি লোকুর অবশ্য বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতি কোনও নাম সুপারিশ করলেও তা নিয়ে স্বাস্থ্যকর আলোচনা হয়।’’ কলেজিয়ামে স্বজনপোষণের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

সিদ্ধান্ত বদলে কলেজিয়ামের যুক্তি ছিল, নতুন তথ্য মিলেছে বলেই আগের দু’জনের নাম প্রত্যাহার করা হল। তা হলে ওই দু’জন কী ভাবে হাইকোর্টের বিচারপতি থাকেন, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে লোকুর বলেন, ‘‘হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মানেই যে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হওয়ার যোগ্য, এমনটা না-ও হতে পারে।’’

বিচারপতি লোকুর বলেন, সরকার বা বিচার বিভাগ— কেউই যত দিন ইচ্ছে কোনও নিয়োগের ফাইল চেপে বসে থাকতে পারে না। বিচারপতি কে এম জোসেফের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রক ফাইল নিয়ে দেরি করে তাঁর নিয়োগে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিচারপতি লোকুর বলেন, হতেই পারে সরকার ফাইল ছাড়তে দেরি করে নিয়োগ রুখেত চাইছে। সে জন্যই সময় বেঁধে দেওয়া উচিত।

গত বছর জানুয়ারিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে যে চার প্রবীণ বিচারপতি মুখ খুলেছিলেন, তার মধ্যে বিচারপতি লোকুরও ছিলেন। এক বছরে পরে তাঁর মূল্যায়ন, ওই সাংবাদিক সম্মেলনের পরে গোটা ব্যবস্থায় কিছুটা খোলা হাওয়া ঢুকেছে। অবসরের পরে বিচারপতিদের সরকারি পদগ্রহণ নিয়ে তাঁর যুক্তি— মানবাধিকার কমিশন, প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নিয়োগই নিয়ম। তবে তিনি নিজে কোনও সরকারি পদ গ্রহণ করছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন