যোগী আদিত্যানাথ।—ফাইল চিত্র।
শিশু-মৃত্যু নিয়ে বিরোধীরা রোজ তোপ দাগছে। এনডিএ-র শরিক শিবসেনাও বলেছে, ‘এ গণহত্যা।’ এমনকী ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতে বলছে খোদ আরএসএস। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অস্বস্তি এখন এমনই।
আরএসএসের অবধ প্রান্তের সঙ্ঘচালক প্রভু নারায়ণ দু’দিন আগে বলেছিলেন, ‘‘শিশুমৃত্যুর ঘটনায় দোষী যিনিই হোন, রাজ্য সরকার নৈতিক দায়িত্ব এড়াতে পারে না। কিছু লোককে বলির পাঁঠা করেও লাভ নেই। এর জন্য গোটা মন্ত্রিসভা ও বিজেপি সংগঠনের প্রায়শ্চিত্ত করা উচিত।’’ আরও জানিয়েছিলেন, যোগীর সাংবাদিক বৈঠকে যে ভাবে মৃত্যুর পুরনো হার তুলে ধরা হয়েছে, তাতে তিনি ব্যথিত। তার পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু আরএসএস নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রভু নারায়ণের এই মন্তব্যের সঙ্গে কোনও দূরত্ব তৈরি করা হয়নি। বলা হয়নি, ‘এটি প্রভু নারায়ণের ব্যক্তিগত অভিমত।’
যোগী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই অসন্তোষ বেড়েছে আরএসএসের। তাঁর হিন্দু যুবা বাহিনীর দৌরাত্ম্যে এমনিতেই খুশি ছিল না সঙ্ঘ। কারণ, যোগী একটি সমান্তরাল সংগঠনই চালাচ্ছিলেন। পরিস্থিতি সহজ করার জন্য আরএসএসের সঙ্গে যোগীর সমন্বয় বৈঠক হয়েছিল। খোদ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ সে ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও যোগীর নিজের এলাকা গোরক্ষপুরের হাসপাতালে ষাটেরও বেশি শিশুর মৃত্যুর পরে তাঁকে নিয়ে আরএসএসের অসন্তোষ প্রকাশ্যে বেরিয়ে এল। শিশু-মৃত্যুর ঘটনায় যোগীর উপরে খুশি নন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। তাঁদের অনেকেরই মত, নিজেকে ‘ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে মেলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন যোগী।
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘গোরক্ষপুরের ঘটনা গোটা ভারতে আঁচ ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রীকেও লালকেল্লা থেকে এ নিয়ে বলতে হয়েছে। ফলে বিষয়টি যথেষ্টই গুরুতর।’’ এর মধ্যেই আজ দিল্লি থেকে পাঠানো চিকিৎসকদের টিম রিপোর্ট দিয়েছে যে, অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়নি শিশুদের। এর জন্য দায়ী চিকিৎসকদের গাফিলতি। যা শুনে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘অমিত শাহ প্রথম দিনেই বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নজরদারিতে তদন্ত হচ্ছে। তখনই বোঝা গিয়েছে, এই তদন্তের নিরপেক্ষতা থাকবে না। প্রয়োজন ছিল কোনও বিচারপতিকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের।’’ সব কিছু খতিয়ে দেখতে শীঘ্রই গোরক্ষপুরে যেতে চান রাহুল গাঁধী।