প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে দলিত সমাজের কোনও নেতাকে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার। ইতিমধ্যেই এই বার্তা দেওয়া হয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে। সব কিছু ঠিক থাকলে এ নিয়ে আলোচনা করতে ১৪ এপ্রিল নাগপুরে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিপুল জয়ের পরেও অভিযোগ, দলের নিয়ন্ত্রণ ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের হাতে। এই অভিযোগ মুছতেই দলিত কাউকে রাষ্ট্রপতি পদে চাইছে আরএসএস। সঙ্ঘের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি পদে কোনও দলিতকে বসালে বিজেপি যে হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাইছে, এই বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। রোহিত ভেমুলা বা গুজরাতের উনায় দলিত নিগ্রহের মতো ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে দলিত বিরোধিতার অভিযোগও মুছে ফেলা সম্ভব হবে।
নজরে রয়েছে মায়াবতীর দলিত ভোট ব্যাঙ্কও। সঙ্ঘের একাংশ মনে করছে, এই সিদ্ধান্তে ২০১৯ সালের লোকসভার আগে দলিত সমাজের কাছে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। ধস নামানো যাবে মায়াবতীর চিরাচরিত ভোট ব্যাঙ্কেও। আগামী লোকসভা নির্বাচনে সঙ্ঘ পরিবার-বিজেপি সব হিন্দুকে এক ছাতার তলায় এনে দলিত-উচ্চবর্ণের ভোটকে একজোট করতে চাইছে। ইতিমধ্যেই দলিত কর্মীদের নিয়ে বুথে বুথে ব্রিগেড তৈরির নির্দেশ দিয়েছে অমিত শাহ। গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে এই কর্মীরা বিজেপির হয়ে প্রচারে নামবেন। এই পরিস্থিতিতে সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত বিজেপি নেতৃত্বকে বুঝিয়েছেন তৃণমূল স্তরে জমির তৈরির পাশাপাশি দলিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করা হলে সরাসরি বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন:মামলার হুঁশিয়ারির জবাব হুঙ্কারে
দলিত হিসেবে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা অবশ্য চূড়ান্ত করেনি সঙ্ঘ। প্রাথমিক ভাবে সঙ্ঘ মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা থাওরচন্দ্র গহলৌতের পক্ষে। গহলৌত বর্তমানে রাজ্যসভার সদস্য ও কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় দফতরের মন্ত্রী। তালিকায় আছেন ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু। কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও আছেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।
রাষ্ট্রপতির বিষয়টি ছাড়াও উত্তরপ্রদেশে আদিত্যনাথের শপথের পরে যে ভাবে গোরক্ষকদের সক্রিয়তা গোটা দেশে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বৃদ্ধি পেয়েছে তা কী ভাবে সমাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা মোদী-ভাগবতের। বিজেপি সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের পরে দেশ কোন পথে চলবে, লোকসভা নির্বাচনের রণনীতি কী হবে তা নিয়েও আলোচনায় বসার কথা রয়েছে উভয় পক্ষের।