National News

আর সময় নেই, জেলের মধ্যেই রোগীর ঢল নামল ডাক্তার দম্পতির ‘চেম্বারে’

আর থাকবেন না দুই ডাক্তার, জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন। শেষ কয়েক দিনে তাই ঢল নামল রোগীর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গাজিয়াবাদ শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ১৫:১২
Share:

রাজেশ-নূপুরের মুক্তিকে ঘিরে ঔৎসুক্য প্রবল। গাজিয়াবাদের জেলের সামনের এই ভিড়ই বলে দিচ্ছে সে কথা। ছবি: পিটিআই।

পসার বেশ জমে উঠেছিল গত চার বছরে। গত কয়েক দিনে প্র্যাকটিস আরও জমজমাট। দুই দন্ত চিকিৎসক মিলে সামাল দিতে পারছিলেন না রোগীর ভিড়।

Advertisement

দসনা জেলের সব আবাসিকই জেনে গিয়েছিলেন, হাতে আর বেশি সময় নেই। কারও দাঁত কনকন, কারও শিরশিরানি, কারও অন্য কোনও সমস্যা। হাতের কাছেই ডাক্তার থাকলেও যাচ্ছি-যাব করে এত দিন যাঁদের আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি, গত কয়েক দিনে তাঁদের ঢল নামল ডাক্তারের ‘চেম্বারে’। দুই চিকিৎসকও সমান আন্তরিকতায় এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করে নিশ্চিত করার চেষ্টা করলেন, কোনও রোগী যেন বাদ না পড়েন।

গাজিয়াবাদের দসনা জেলের ভিতরের ছবিটা অনেকটা এই রকমই ছিল গত কয়েক দিনে। জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই জানা গিয়েছে সে কথা। ১২ অক্টোবর ইলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, রাজেশ তলোয়ার এবং নূপুর তলোয়ার অপরাধী নন। নিজেদের মেয়ে আরুষি এবং পরিচারক হেমরাজকে তলোয়ার দম্পতিই খুন করেছিলেন, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে। সে দিনই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তলোয়ার দম্পতি মুক্তি পাচ্ছেন। ১৩ অক্টোবর অর্থাৎ শুক্রবার তাঁরা জেল থেকে ছাড়া পাবেন বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু রায়ের নথি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় দন্ত চিকিৎসক দম্পতির মুক্তি কয়েক দিনের জন্য আটকে যায়। আজ, সোমবার দসনা জেলে আর রাত কাটাতে হবে না রাজেশ-নূপুরকে। দীর্ঘ চার বছর পর স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তির ছাপ তলোয়ারদের মুখে। খুশি দসনা জেলের অন্য আবাসিকরাও। কিন্তু তলোয়ারদের ছাড়া দাঁতের চিকিৎসার কী হবে, অন্য ছোটখাটো অসুস্থতায় চট করে ছুটে যাওয়া যাবে কার কাছে, এ সব ভেবে চিন্তিত অনেকেই। জেলের নিজস্ব চিকিৎসা পরিকাঠামো রয়েছে ঠিকই। কিন্তু গত কয়েক বছরে তলোয়ার দম্পতি যতটা আপন হয়ে উঠেছিলেন আবাসিকদের, জেল হাসপাতালের ডাক্তারদের সঙ্গে ততটা কাছের সম্পর্ক তো নেই। তাই মন খারাপ অনেকেরই।

Advertisement

আরও পড়ুন: তাজমহল ভারতীয় সংস্কৃতির কলঙ্ক! ফের বিতর্কে বিজেপি

আরও পড়ুন: হানিপ্রীতের ল্যাপটপের হদিশ পেতে বিপাসনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে পুলিশ

গাজিয়াবাদের নিম্ন আদালত তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পর থেকে গত চার বছর জেলেই ছিলেন রাজেশ-নূপুর। গোড়া থেকেই জেলের আবাসিকদের দাঁতের চিকিৎসার ভার বর্তেছিল তাঁদের উপরে। সেই কাজের জন্য রাজেশ তলোয়ার এবং নূপুর তলোয়ারের প্রাপ্য পারিশ্রমিকও জমা হচ্ছিল। জেল সুপার দধিরাম মৌর্য জানিয়েছেন, ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা জমা হয়েছে রাজেশ-নূপুরের খাতায়। কিন্তু সেই টাকা নিতে তাঁরা অস্বীকার করেছেন বলেও জেল সূত্রেই জানা গিয়েছে। যাঁদের সঙ্গে চার বছর কাটালেন, তাঁদের চিকিৎসার জন্য টাকা নিতে রাজি নন দম্পতি। তাই প্রত্যাখ্যান। সেবা অবশ্য থামবে না, আবাসিকদের এবং জেল কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেছেন রাজেশ তলোয়ার ও নূপুর তলোয়ার। জেল থেকে দীর্ঘ দিন পর বাড়ি ফিরছেন ঠিকই। কিন্তু মাসে দু’বার দসনা জেলে তাঁরা যাবেন, রোগীও দেখবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন