এসপিও: বেতন বাড়িয়েও চিন্তায় দিল্লি

চাকরি ছাড়ার সংখ্যাটা হয়তো খুব বেশি নয়। কিন্তু তাতেই প্রমাদ গুনে দ্রুত দীর্ঘদিনের দাবি মিটিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার (এসপিও)-দের বেতন এক ধাক্কায় দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

চাকরি ছাড়ার সংখ্যাটা হয়তো খুব বেশি নয়। কিন্তু তাতেই প্রমাদ গুনে দ্রুত দীর্ঘদিনের দাবি মিটিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার (এসপিও)-দের বেতন এক ধাক্কায় দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। কিন্তু তারপরেও এসপিও-দের কাজে যোগ না দেওয়া রীতিমতো চিন্তায় রেখেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। এসপিও-রা বসে যাওয়ায় থমকে গিয়েছে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে জঙ্গি দমন অভিযান।

Advertisement

দিন কয়েক আগে তিন এসপিও-কে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে খুন করে বার্তা দিতে চেয়েছিল পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে, সেই কাজে অন্তত প্রাথমিক ভাবে সফল হয়েছে হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গিরা। সতীর্থদের হত্যার ওই ভিডিও দেখে কাশ্মীরের বহু এসপিও ইস্তফা দিতে দিচ্ছেন। পুরুষের পাশাপাশি ইস্তফা দেন মহিলা এসপিওরাও। অনেক ক্ষেত্রে চাকরি না ছাড়লেও ঘরে বসে গিয়েছেন বহু এসপিও।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বলছেন, ‘‘উপত্যকার বহু থানায় এসপিও-রা কাজে যাচ্ছেন না। মূলত পরিবারের চাপে তাঁরা পিছিয়ে আসছেন। আরও ওই সংখ্যাটি ক্রমশ বাড়ছে। এসপিও-রা বসে যাওয়ায় বহু স্থানে স্থানীয় স্তরে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। জঙ্গিদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য আসছে না।’’ তাঁর মতে, বিষয়টি এখনও গুরুতর আকার নেয়নি ঠিকই, কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দিনে জঙ্গি দমন প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।

Advertisement

তিন পুলিশকর্মীকে হত্যার পরে হিজবুল মুজাহিদিনের কম্যান্ডার রিয়াজ নাইকু ভিডিয়োর মাধ্যমে বাকি এসপিও-দের অবিলম্বে কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার্তা পাঠিয়েছিল। তারপরেই ইস্তফার হিড়িক পড়ে যায়। চিত্রটি পাল্টাতে প্রাথমিক ভাবে এখন রিয়াজকে দ্রুত নিকেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে, রিয়াজ খতম হলে হিজবুলের কোমর ভাঙবে। ভরসা পাবেন এসপিও-রা।

জম্মু-কাশ্মীরের নিরিখে এসপিও-দের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইউপিএ আমলে প্রথম এঁদের নিয়োগ করা হয়। স্থানীয় যুবকদের পুলিশে নিয়োগ করলে এক দিকে বেকারির সমস্যা মিটবে, অন্য দিকে জঙ্গি গতিবিধি সম্পর্কে খবর পাওয়া যাবে-এই যুক্তিতে গোটা উপত্যকা জুড়ে এঁদের নিয়োগ শুরু হয়। বর্তমানে যাঁদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ হাজারে। ওই যুবকেরা দীর্ঘ দিন ধরেই স্থায়ী নিয়োগ ও বেতন বৃদ্ধির দাবি করে আসছিলেন। স্থায়ী নিয়োগের প্রশ্নে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত না নিলেও, এসপিও-রা ইস্তফা দেওয়া শুরু করতেই তাঁদের ধরে রাখতে বেতন দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন