সলমন খরশিদ। —ফাইল চিত্র।
দলের ক্ষমতার বলয় থেকে ছিটকে পড়ে রাহুল গাঁধীর অস্বস্তি বাড়ালেন কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। কর্নাটকের ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন তিনি।
গত কাল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে সলমন বলেন, ‘‘কংগ্রেসের হাতে রক্তের দাগ লেগে রয়েছে।’’ ১৯৮৪ সালে শিখ নিধন ও ১৯৯২-এ কেন্দ্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কথা টেনে প্রশ্ন করা হয়েছিল খুরশিদকে। তার জবাবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘ভুল থেকেই মানুষকে শিক্ষা নিতে হয়।’’
কর্নাটকের উত্তপ্ত ভোটে নয়া অস্ত্র পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে মোদীর দল। সে রাজ্যে দাঁড়িয়ে বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেছেন, ‘‘রাহুল গাঁধী যখন ‘সংবিধান বাঁচাও’ অভিযান করছেন, সেই সময়ে সত্যি কথাটা সবার সামনে তুলে ধরেছেন খুরশিদ। কংগ্রেসের হাতে সত্যিই সংখ্যালঘুদের রক্তের দাগ লেগে রয়েছে।’’ এ মাসের শেষ থেকে কর্নাটকে এক ডজনেরও বেশি সভা করবেন মোদী। সলমনের মন্তব্যকেও তিনিও কাজে লাগাবেন দলীয় সূত্রের খবর।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কংগ্রেস ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক’দিন আগেও বেসুরো গেয়েছিলেন সলমন। সংখ্যালঘুদের নিয়ে তাঁর মন্তব্য নতুন করে অস্বস্তি বাড়ানোয় কড়া ভাষায় আজ নিন্দা করেছে এআইসিসি। দল জানিয়েছে, খুরশিদের মন্তব্যকে খারিজ করছে এআইসিসি। স্বাধীনতার আগে ও পরে কংগ্রেসই একমাত্র দল, যারা সংখ্যালঘুদের পাশে রয়েছে, সমাজের সব স্তরের মানুষকে নিয়ে এগোতে চেয়েছে। এমন মন্তব্য সেই দলকেই সাহায্য করবে, যারা সমাজে বিভাজন ঘটিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়।
এর পরেও থামেননি খুরশিদ। টুইটে অবশ্য তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু পরে বলেন, ‘‘এক জন মানুষ হিসেবে আমি এ কথা বলেছি। ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ভাবে আমাদের কারও উপর কোনও দায় থাকলে তার জবাব দেওয়া উচিত। আমি কী কোনও মন্তব্য এযাবৎ প্রত্যাহার করেছি? এ কাজ আমি করে যাব।’’ সলমন-ঘনিষ্ঠ কিছু নেতার বক্তব্য, গত কালই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, রক্তের দাগ তিনি দেখাতে রাজি আছেন, যাতে সকলে বুঝতে পারেন হাত সাফ রাখাটা জরুরি। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনও ঘটনা যাতে আর না ঘটে— সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন খুরশিদ।
কিন্তু কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, আসলে দলের ক্ষমতা বলয় থেকে ছিটকে গিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করছেন সলমন। নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তিনি। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হবে। বিরোধীদের হাত এ ভাবে শক্ত করলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে কংগ্রেস।