পাশে আছি। প্রতিবন্ধীদের সহায়ক সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। সোমবার শিলচরে পীতাম্বর নেয়ারের তোলা ছবি।
সাংসদ সুস্মিতা দেবকে মঞ্চে বসিয়েই পূর্বতন তরুণ গগৈ সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগলেন বক্তারা।
বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়মন্ত্রী থওরচাঁদ গেহলট— সবাই কংগ্রেসের শাসনকালের সমালোচনায় মুখর ছিলেন। বাদ যাননি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও। সুস্মিতাদেবী সে সব গায়ে না মাখার ঢঙে তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় শুধু প্রতিবন্ধী পেনশনের হার বৃদ্ধির দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘‘এই সময়ে বাছাই করা প্রতিবন্ধীরা মাসে ৩৫০ টাকা পেনশন পান। অঙ্কটি বড় কম।’’ তা যেন শীঘ্র বাড়ানো হয়, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গেহলটকে অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘আর্টিফিসিয়াল লিম্বস ম্যানুফ্যাকচারিং করপোরেশন অব ইন্ডিয়া’ (অ্যালিমকো) আজ শিলচরে প্রতিবন্ধীদের সহায়ক সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করে। বরাক উপত্যকার ১ হাজার ১৩৮ জনকে বিভিন্ন ধরনের সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে ডেইজি প্লেয়ার, স্মার্ট কেইন, স্মার্ট ফোন, ট্রাই-সাইকেল, হুইল চেয়ার, ওয়াকিং স্টিক, রোলেটর, ব্রেইল কিট। দু’জন কুষ্ঠরোগীকেও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়। বিতরণ হয় সিপি চেয়ার, মাল্টি সেন্সরি ইনক্লুসিভ এডুকেশনাল কিটের মতো জিনিসও।
এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থওরচাঁদ গেহলট, তাঁর দফতরের প্রতিমন্ত্রী কিষানপাল গুর্জর এবং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল আজ শিলচরে আসেন। ছিলেন শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবও।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডেপুটি স্পিকার তথা শিলচরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল বলেন, ‘‘আগেও লক্ষ কোটি টাকার এই ধরনের সামগ্রী কাগজেপত্রে বিলি করা হয়েছে, বাস্তবে সে সব যে কোথায় বিলি হয়েছে, কে জানে!’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গেহলট বলেন, ‘‘সামগ্রী দূরে থাক, সামাজিক ন্যায় বলে যে একটি মন্ত্রক ছিল, তা-ই আগে কখনও টের পাওয়া যায়নি।’’ তিনি দায়িত্ব নিয়ে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। প্রকাশ্য সভায় সামগ্রী বিতরণ, ওয়েবসাইটে সমস্ত তথ্য জানানোর ব্যবস্থা করেন।
গেহলট কেন্দ্রের পুরনো সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ-মুখর ছিলেন, তেমন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল তাঁর বক্তৃতায় গগৈ সরকারকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেন। তিনি বরাকবাসীর আবেগকে নিজের দিকে টেনে উপত্যাকার পিছিয়ে থাকার জন্য গগৈ সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যোগাযোগ, স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিদ্যুৎ— সব দিকেই এই অঞ্চল পিছিয়ে ছিল। আমরা বরাক-ব্রহ্মপুত্রের মধ্যে সমন্বয় ও সম-উন্নয়ন চাই।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গেহলট কংগ্রেসের সমালোচনা করলেও পেনশন বৃদ্ধির প্রস্তাবের জন্য সুস্মিতা দেবের প্রশংসাই করেন। কিন্তু পেনশন বাড়ানোর স্পষ্ট কোনও ঘোষণা করেননি। এ ব্যাপারে দায় চাপিয়ে যান রাজ্য সরকারের কাঁধেই। তিনি বলেন, ‘‘সোনোয়াল সরকার কেন্দ্রের ৩৫০ টাকার সঙ্গে আরও কিছু অর্থ যোগ করে দিতে পারে।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার প্রতিবন্ধীদের এই বছর ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বছর থেকে তা বেড়ে হবে ১২ হাজার টাকা। ওই অর্থ মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।