অসম চুক্তি রূপায়ণ, মত দেবে বরাকও

অসম চুক্তির সফল রূপায়ণ ও অসমীয়ার প্রকৃত সংজ্ঞা নির্ধারণে বরাক উপত্যকাতেও গণ সমাবেশ করা হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৬
Share:

অসম চুক্তির সফল রূপায়ণ ও অসমীয়ার প্রকৃত সংজ্ঞা নির্ধারণে বরাক উপত্যকাতেও গণ সমাবেশ করা হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তাঁর কথায়, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে নেওয়া হবে সকলের মতামত। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের জমিতে শুধু মাত্র ভূমিপুত্রদেরই

Advertisement

অধিকার থাকবে।’’

বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিদগ্ধজনদের সঙ্গে গত কাল দিনভর মত বিনিময় করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে সোনোয়াল জানান, তিনি ও তাঁর সরকার ভূমিপুত্রদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে এবং অসম চুক্তির সফল রূপায়ণে বদ্ধপরিকর। সীমান্ত পুরো সিল করে অনুপ্রবেশ রোখার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলেও

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী জানান।

সোনোয়াল বলেন, ‘‘নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি ও বিদেশি চিহ্নিতকরণের জন্য নাগরিক পঞ্জি নবীকরণ করার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।’’ তিনি আশ্বাস দেন, সেখানে ভূমিপুত্রদের স্বার্থ রক্ষিত হবে। জমির অধিকার নিশ্চিত করা হবে। সকলের মতামত নিয়ে তৈরি হবে নতুন ভূমি নীতি। তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে সরকার ঠিক করেছে, জমির অধিকার শুধুই ভূমিপুত্রদের হাতে থাকবে। পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য বরাকেও চলমান মত গ্রহণ কেন্দ্রের আয়োজন করা হবে বলে

তিনি জানান।

বুদ্ধিজীবি ও অন্য সংগঠনগুলি জানায়, ১৯৮৫ সালে অসম চুক্তি হলেও আজ পর্যন্ত তার ষষ্ঠ, দশম ও একাদশ দফার পূর্ণ রূপায়ণ করেনি কোনও সরকার। অসম চুক্তি অনুযায়ী, ‘অসমীয়া’ হওয়ার ভিত্তিবর্ষ ১৯৭১ সাল। সমাবেশে আইনজ্ঞরা বলেন: সিকিম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় বা অরুণাচলের মতো সংবিধানের ৩৭১ ধারা অনুযায়ী ‘অ্যাসামিজ পিপল’ বা ‘অসমীয়া’ স্থানে ‘ইন্ডিজেনাস পিপল অফ অসম’ বা ‘ভূমিপুত্র’ শব্দটি ব্যবহার করলে জটিলতা কমবে। কেন্দ্র হিন্দু বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আইন সংশোধনের পথে হাঁটছে, এই অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদও করা হয়েছে। অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা অবশ্য মনে করেন, ‘আদি অসমীয়া’ হওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখলে ১৯৫১ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে অসমে আসা ব্যক্তিরাও নাগরিকত্ব পেতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘‘অসম আন্দোলনে শহীদ হওয়া ৮৫৫ জন যুবক কিন্তু ভিত্তিবর্ষ চেয়েছিল ১৯৫১ সালকে। অথচ আলোচনার পরে চুক্তিতে ১৯৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরা হয়। তাই তখন যদি মানবিকতার স্বার্থে আপোস করা হয়ে থাকে, তাহলে এখনও যুক্তি একই। মানবতার ভিত্তিতেই হিন্দু বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রটি বিবেচনা করতে হবে।’’

সোনোয়াল বলেন, ‘‘গত কালের আলোচনা শুধুমাত্র এক সূচনা।’’ অবশ্য কংগ্রেসের মতে, ঘটা করে পাঁচ তারা হোটেলে মত বিনিময় করা ও রাজ্যের সকলের মতামত নেওয়ার কর্মসূচি আসলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ওঠা জনরোষ ঠেকাতে বিজেপির ঢাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন