সত্যপাল মালিক। ফাইল চিত্র।
ফের বিতর্কের সৃষ্টি করলেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। জানিয়ে দিলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের কথা শুনে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হলে জম্মু-কাশ্মীরের সরকার গড়তে পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোনকেই ডাকতে হত তাঁকে। কিন্তু ইতিহাসে একজন ‘নির্লজ্জ’ মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাননি তিনি। ফলে কাউকে সরকার গড়তে না দিয়ে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গ্বালিয়রে একটি কলেজের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের এমন মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, সরকার গড়তে সাজ্জাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘রাজ্যপালের কথায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে ঘোড়া কেনাবেচা করে তারা সরকার গড়ার চেষ্টা চালিয়েছিল।’’ রাজভবনে ফ্যাক্স অচল থাকায় পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির সরকার গড়ার চিঠি মালিকের কাছে পৌঁছয়নি। এ নিয়ে এত দিন ক্ষোভ জানিয়ে এসেছেন তিনি। মেহবুবা আজ বলেন, ‘‘রাজ্যপাল দিল্লির দিকে তাকিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে যে দাবি করেছেন, আমি তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ, বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচা করে, টাকার জোরে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার চেষ্টা করেছিল।’’ রাজ্যপাল যে ভাবে দিল্লির ‘ইচ্ছের কথা’ ফাঁস করেছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা।
জম্মু-কাশ্মীরে কোনও বিকল্প সরকার গড়ে না ওঠার পিছনে ভূমিকা ছিল একটি অচল ফ্যাক্স মেশিনের। মেহবুবা অভিযোগ করেছিলেন, ফ্যাক্স খারাপ থাকায় তাঁর চিঠি রাজ্যপালের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। আর এর পরেই বিধানসভা ভেঙে দিয়েছেন রাজ্যপাল। কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো দলগুলিও একই অভিযোগ এনেছিল। গ্বালিয়রে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মালিককে। অনুষ্ঠানে এক বক্তা পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘চম্বল নদীর দূষণ নিয়েই চিন্তিত হলে চলবে না, শ্রীনগরের রাজভবনের অচল ফ্যাক্স মেশিনের কথাও তোমাদের ভাবতে হবে। রাত সাতটার পরে এটি কাজ করে না।’’ জবাব দিতে হয় রাজ্যপালকে। বলেন, ‘‘যদি মেহবুবা বা ওমররা সরকার গড়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে ভাবতেন, তা হলে আমার সঙ্গে তাঁদের দেখা করা উচিত ছিল।’’ মালিকের মন্তব্য, ‘‘দিল্লির দিকে তাকিয়ে কাজ করিনি। সেটা করলে সাজ্জাদ লোনকে সরকার গড়তে ডাকতাম। যে কেউ আমার সমালোচনা করতেই পারেন। কিন্তু আমি অন্যায় করিনি।’’