রঞ্জিত সিন্হা ও অলোককুমার বর্মা
প্রাক্তনের বিরুদ্ধে বর্তমান।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের প্রাক্তন প্রধান রঞ্জিত সিন্হার বিরুদ্ধে এ বার তদন্ত করবেন ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থারই বর্তমান শীর্ষকর্তা অলোককুমার বর্মা। কয়লা কেলেঙ্কারি মামলায় আজ এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি মদন বি লোকুরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এমন নজির নেই বলেই জানাচ্ছেন আমলারা।
বেঞ্চ জানায়, সিবিআইয়ের নেতৃত্বে বদল হয়েছে। তাই প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য আলাদা দলের দরকার নেই। বর্তমান প্রধান অলোককুমারের নেতৃত্বে সিবিআইয়েরই বিশেষ দল এই বিষয়ে অনুসন্ধান করবে। আইনি বিষয়ে ওই দলকে সাহায্য করবেন কয়লা কেলেঙ্কারি মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি আর এস চিমা। তদন্তে কত সময় লাগবে, সিবিআই প্রধানকে তা জানাতে হবে পরবর্তী শুনানিতে।
সিবিআই-প্রধান থাকার সময়ে রঞ্জিত সিন্হা টুজি ও কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তে প্রভাব খাটিয়েছিলেন কি না— এ সবই এ বার খতিয়ে দেখবে সিবিআই। এর আগে টুজি ও কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত চলাকালীন শীর্ষ আদালতে একটি ডায়েরি জমা দিয়েছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি জানান, ওই ডায়েরি তৎকালীন সিবিআই-প্রধান রঞ্জিত সিন্হার সরকারি বাসভবনে অতিথিদের যাতায়াতের রেজিস্টার। ২ নম্বর জনপথ রোডের ওই ভবনে যাঁরা রঞ্জিতের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তাঁদের সকলেরই পরিচয় রেজিস্টারে নথিবদ্ধ করতেন রক্ষীরা। প্রশান্ত জানান, ওই ডায়েরিতে টুজি ও কয়লা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত সংস্থার প্রতিনিধিদেরও নাম রয়েছে। এই সূত্রে প্রশান্ত অভিযোগ করেন, সিবিআই-প্রধানের পদে থেকে রঞ্জিত সিন্হা অন্যায় ভাবে ওই দুই কেলেঙ্কারির তদন্তে প্রভাব খাটাচ্ছেন।
এই অভিযোগের জেরে শেষ পর্যন্ত রঞ্জিতকে টুজি তদন্ত থেকে সরিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। প্রাক্তন সিবিআই-প্রধানের আইনজীবী অবশ্য সওয়ালে জানান, তদন্তের স্বার্থেই তাঁর মক্কেল অভিযুক্তদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অভিযুক্তদের সাহায্য করেননি। তা ছাড়া, ওই ডায়েরিতে অনেক ভুয়ো তথ্য যোগ করা হয়েছে বলেও পাল্টা অভিযোগ আনেন তিনি। ডায়েরিটি আসল কি না তা
যাচাই করতে সিবিআইয়ের প্রাক্তন বিশেষ অধিকর্তা এম এল শর্মার নেতৃত্বে কমিটি তৈরি করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি জানান, ডায়েরিটি আসল বলেই মনে করছে কমিটি। এ বার সেই তদন্ত এগোবে অলোককুমার বর্মার নেতৃত্বে।
কয়লা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত অন্য মামলায় আজ প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ নবীন জিন্দল-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিতে সিবিআইকে আরও সময় দিয়েছে বিশেষ আদালত।