Science News

গোগ্রাসে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে এই এনজাইম!

তা হলে কি প্লাস্টিক বর্জ্যের দূষণ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের দিন এ বার সত্যি-সত্যিই শেষ হতে চলেছে?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৪০
Share:

প্লাস্টিক আবর্জনার স্তূপ। -ফাইল চিত্র।

গোগ্রাসে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে এনজাইম বা উৎসেচক! কোনও প্লাস্টিক বর্জ্যকেই পড়ে থাকতে দিচ্ছে না। সব প্লাস্টিকই চলে যাচ্ছে সেই ‘প্লাস্টিক-খেকো’ এনজাইমের পেটে! এর আগে পাকিস্তানে আবর্জনার স্তূপে হদিশ মিলেছিল প্লাস্টিক-খেকো একটি বিশেষ প্রজাতির ছত্রাকের।

Advertisement

কোনও কল্পকাহিনী নয়, সায়েন্স ফিকশনও নয়। হালে সেই ‘প্লাস্টিক-খেকো’ এনজাইমের হদিশ পেয়েছেন ব্রিটেন ও আমেরিকার এক গবেষকদল।

তা হলে কি প্লাস্টিক বর্জ্যের দূষণ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের দিন এ বার সত্যি-সত্যিই শেষ হতে চলেছে?

Advertisement

উত্তরটা এখনও অজানা থাকলেও, সেই সম্ভাবনা যে একেবারে অসম্ভব নয়, এ বার তারই দিশা দেখালেন গবেষকরা।

তাঁরা এমন একটি এনজাইম বা উৎসেচকের হদিশ পেয়েছেন, যা গপাগপ করে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলে। প্লাস্টিকের ওই বিশেষ যৌগটির নাম- ‘পলিইথিলিন টেরেফ্‌থ্যালেট’ (পিইটি বা ‘পেট’)। ওই প্লাস্টিক যৌগ গিয়ে বোতল বানানোর জন্য প্রথম পেটেন্ট হয়েছিল ১৯৪০-এর দশকে। বোতল বানানোর জন্য প্লাস্টিক পরিবারের ওই বিশেষ যৌগটিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল একটাই কারণে, তা হল- ওই যৌগটি পরিবেশে লক্ষ লক্ষ বছর টিঁকে থাকতে পারে। হালের গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে, প্লাস্টিকের এই বিশেষ যৌগ পলিইথিলিন টেরেফ্‌থ্যালেট-ই পৃথিবীর স্থল ও জলের বেশির ভাগ অংশে দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে।

সেই প্লাস্টিক-খেকো এনজাইম

অন্য একটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করার সময়েই ব্রিটেনের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কিন শক্তি মন্ত্রকের অধীনে থাকা ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি ল্যাবরেটরির (এনআরএএল) বিজ্ঞানীরা ওই এনজাইমটির হদিশ পেয়েছেন।

সেই বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক- ‘পলিইথিলিন টেরেফ্‌থ্যালেট’, যা গোগ্রাসে খেয়ে ফেলে এনজাইম

গবেষকরা দেখেছেন, ওই এনজাইমটি একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়াকে সাহায্য করে প্লাস্টিকের বিশেষ যৌগ ‘পেট’কে ভেঙে ফেলতে বা ‘খেয়ে হজম’ করে ফেলতে।

সহযোগী গবেষক, পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন ম্যাকগিহান জানিয়েছেন, এনজাইমটির এই ক্ষমতার কথা জানতে পেরে তাঁরা সেই ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন। তার জন্য তাঁরা কয়েকটি অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রয়োগ করে দেখেন, তাতে এনজাইমগুলি আরও দ্রুত প্লাস্টিক খেয়ে নিতে পারছে।

এ বার গবেষকরা দেখবেন, আগামী দিনে বড় বড় শিল্পক্ষেত্রেও এই এনজাইমের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তাকে প্লাস্টিক বর্জ্য সাফাইয়ের কাজে লাগানো যায় কি না, বাণিজ্যিক ভাবে। তাঁরা এটাও দেখবেন, অন্য প্লাস্টিক যৌগ নষ্ট করার ক্ষেত্রেও এদের ব্যবহার করা যায় কি না।

কোনও কোনও বিজ্ঞানী বলছেন, এনজাইম আদৌ বিষাক্ত নয় বলে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর হতে পারে ভবিষ্যতে, শিল্পজাত প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ কমাতে। তবে এ ব্যাপারে আরও গবেষণা দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন