এ ভাবেই দলের বিধায়ককে পেটান বিজেপি সাংসদ। ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি
প্রথমে বাগবিতণ্ডা। তার পর জুতো খুলে দমাদ্দম মার। পাল্টা হিসেবে আক্রান্তও চালালেন কয়েকটা কিল-চড়। যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ কোনও আম আদমি নয়, দু’জনই জনপ্রতিনিধি।। এক জন সাংসদ, অন্য জন বিধায়ক। কিন্তু আলাদা দলের নয়, বরং একই দলের। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ শরদ ত্রিপাঠী এবং কবিরনগরের বিধায়ক রাকেশ বাগেল। পদস্থ আমলা-পুলিশকর্মীদের সামনেই সরকারি বৈঠকে এ রকমই মারপিটে জড়ালেন দুই নেতা।
ঘটনার সূত্রপাত একটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর নিয়ে। কবিরনগর জেলায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের জেলা সমন্বয় কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে জনপ্রতিনিধি এবং আমলারা হাজির ছিলেন। কয়েক দিন আগেই ওই এলাকায় একটি প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। কিন্তু সেই শিলান্যাসের ফলকে বিধায়ক রাকেশ বাগেলের নাম থাকলেও সাংসদ শরদ ত্রিপাঠীর নাম রাখা হয়নি। কেন ফলকে তাঁর নাম রাখা হয়নি, এ নিয়ে বৈঠকে বিধায়ককে প্রশ্ন করেন সাংসদ। বিধায়কের উত্তর ছিল, তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রে যাবতীয় সরকারি প্রকল্পের দায়-দায়িত্ব তাঁর নিজের উপর। তাই তাঁর নাম রাখা হয়েছে।
এতেই চটে যান সাংসদ। আরও উত্তেজিত হয়ে নির্দেশ দেন, ওই নাম ফলকে তাঁর নামও ঢোকাতে হবে। তখন বিধায়ক জানান, এক বার নামফলক তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন আর তাতে অন্য কারও নাম ঢোকানো সম্ভব নয়। এতেই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাংসদ। ভরা বৈঠকের মধ্যেই পা থেকে জুতো খুলে বিধায়ককে পেটাতে শুরু করেন। তার সঙ্গে চলতে থাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি। আচমকা আক্রমণের প্রাথমিক ধাক্কা সামলে প্রতিরোধ ও পাল্লা জবাব দিতে শুরু করেন বিধায়কও। তিনিও সাংসদকে চড় মারতে শুরু করেন।
দুই বিধায়কের এই ‘মল্লযুদ্ধ’ থামাতে কিছুক্ষণের মধ্যেই ছুটে আসেন পুলিশ কর্মীরা। বিধায়ক কিছুটা শান্ত হলেও সাংসদ তখনও অগ্নিশর্মা। অবস্থা এমনই যে, পারলে পুলিশের ঘেরাটোপ সরিয়ে ফের গিয়ে বিধায়কের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কর্মীরা তাঁকে বাইরে নিয়ে যান। ভেস্তে যায় বৈঠক।
গোটা এই ঘটনার ভিডিয়ো সংবাদ মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ব্লক বা পঞ্চায়েত স্তরের কোনও নেতা নন, দু’জনই সর্বোচ্চ পর্যায়ের জন প্রতিনিধি। তাঁরাই যদি এ রকম নজির সৃষ্টি করেন, তা হলে জনমানসে তার কী প্রভাব পড়বে। বিজেপির উদ্দেশে দু’জনের বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকেই চুরি গিয়েছে রাফালের নথি! সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
আরও পড়ুন: ৮০ শতাংশ বোমাই লক্ষ্যে আঘাত করেছে, কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিল বায়ুসেনা
উত্তরপ্রদেশ বিজেপি সূত্রে খবর, দলও সেই পথেই এগোচ্ছে। সাংসদ এবং বিধায়ক দু’জনের বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)