প্রবীণ নাগরিকদের স্বার্থরক্ষায় আরও কড়া আইন আনতে চলেছে কেন্দ্র। ষাট বছর এবং তার চেয়ে বেশি বয়সের বাবা-মায়ের উপরে অত্যাচার অথবা তাঁদের যত্নের ব্যাপারে কোনও অবহেলা করলে আগামী দিনে আরও কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে সন্তানদের। আগে এর সাজা ছিল তিন মাস জেল। সেটাই ছ’মাস করার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। বাবা-মা, প্রবীণ নাগরিকদের দেখভাল ও কল্যাণমূলক আইনে এই সংক্রান্ত সংশোধনীর খসড়া ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে সামাজিক ন্যায় মন্ত্রক।
বদল আসছে সন্তানের সংজ্ঞাতে। দত্তক সন্তান ও সৎ ছেলে-মেয়েও সন্তান হিসেবে গণ্য হবেন। এমনকি জামাই, বৌমা, নাতি, নাতনিরাও পড়বেন সন্তানের তালিকায়। পরিবর্তন হচ্ছে দেখভালের সংজ্ঞায়। খাবার, জামাকাপড়, চিকিৎসা, সুরক্ষা, থাকার ব্যবস্থা— সবই যুক্ত করা হচ্ছে সেখানে। নিঃসন্তান দম্পতিদের আত্মীয়ের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে তাঁদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারীকে। তবে এর মধ্যে ধরা হবে না নাবালকদের।
মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানান, সন্তানেরা দেখভাল না করলে প্রবীণেরা যাতে নির্দিষ্ট ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে খসড়া আইনে। সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ খতিয়ে বাবা-মায়ের কাছে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেবে সন্তানদের। নিঃসন্তান দম্পতিদের ক্ষেত্রে ওই নির্দেশ দেওয়া হবে নিকটতম আত্মীয়দের। টাকার অঙ্ক ঠিক হবে বাবা-মায়ের জীবনযাত্রা ও দু’তরফের আর্থিক অবস্থার উপরে ভিত্তি করে। দেখভালের মাসিক অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে শাস্তি এক মাসের জেল। বর্তমানে দেখভালের অঙ্ক প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন:
আধার রায় স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট
সংসদে এই বিল পাশ হলে দেশের প্রতি জেলায় অন্তত একটি সিনিয়র সিটিজ়েন কেয়ার হোম চালু করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিলে থাকছে, সম্পত্তি হস্তান্তরের পরে আইনি উত্তরাধিকারী যদি বাবা-মায়ের দেখভাল না করেন, সে ক্ষেত্রে বিষয়টিকে প্রতারণা হিসেবে ধরা হবে। যার ফলে ট্রাইব্যুনাল সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে পারে বাবা-মাকে।
এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি বিমা, স্বাস্থ্য, বাড়ি, ভ্রমণ প্রকল্পে প্রবীণ নাগরিকদের বয়ঃসীমা ৬০ বছর করার প্রস্তাব রয়েছে ওই খসড়া বিলে।