Ahmed patel

করোনায় প্রয়াত সনিয়া-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ পটেল

কোভিড পরবর্তী শারীরিক জটিলতাতেই গাঁধী পরিবার ঘনিষ্ট নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে টুইট করে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৮:০৪
Share:

আহমেদ পটেল। ফাইল চিত্র।

মারা গেলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ পটেল। বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ দিল্লির মেদান্ত হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মাস খানেক আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন সনিয়া গাঁধীর অন্যতম রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। তার পর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একাধিক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই কোভিড পরবর্তী শারীরিক জটিলতাতেই গাঁধী পরিবার ঘনিষ্ঠ নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে টুইট করে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে। মৃত্যুকালে আহমেদের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

Advertisement

বুধবার ভোর ৪টে নাগাদ টুইট করে বাবার মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন ফৈজল পটেল। বাবার আত্মার শান্তি কামনা করে সেই টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার বাবা আহমেদ পটেল ২৫ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৩টেয় প্রয়াত হয়েছেন। এক মাস আগে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল’। পাশাপাশি করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে আহমেদের শেষকৃত্যে জমায়েত না করার অনুরোধ করেছেন।

আহমেদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা শোক প্রকাশ করেছেন। কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গাঁধী বলেছেন, ‘‘বিশ্বস্ত সহকর্মী এবং বন্ধুকে হারালাম। এই ক্ষতি অপূরণীয়।’’ শোক বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘আমি এমন এক সহকর্মীকে হারালাম যাঁর সারা জীবন কংগ্রেস দলের প্রতি নিবেদিত ছিল। তাঁর বিশ্বস্ততা, কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠা, উদারতার মতো এমন অনেক গুণ ছিল, যা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। তাঁর মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর মৃত্যুর জন্য শোকপ্রকাশ করছি এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি’। প্রসঙ্গত, শুরু থেকেই গাঁধী পরিবারের কাছের লোক ছিলেন আহমেদ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন সনিয়ার রাজনৈতিক সচিবও ছিলেন। রাজনীতির অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, সনিয়া গাঁধীর নেওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অংশীদার ছিলেন আহমেদ।

Advertisement

মাত্র ২৮ বছর বয়সে তরুণ কংগ্রেস নেতা হিসাবে তাঁকে লোকসভার টিকিট দিয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। ১৯৭৭ সালে গুজরাতের বারুচ থেকে লড়েছিলেন তিনি। তার পর ৩ বার লোকসভার সাংসদ এবং ৫ বার রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেসের বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

আহমেদের মৃত্যুতে টুইট করে শোকবার্তা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহমেদের ছেলে ফৈজলের সঙ্গে কথাও বলেছেন মোদী। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আহমেদ পটেলজি-র প্রয়াণে শোকাহত। সমাজের সেবায় জীবনের বহু বছর কাটিয়েছেন তিনি। কংগ্রেস দলকে পোক্ত করতে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ক্ষুরধার মস্তিষ্কের জন্য তিনি বরাবরই পরিচিত। আহমেদ ভাইয়ের আত্মার শান্তিকামনা করি’।

আহমেদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে রাহুল গাঁধী লিখেছেন, ‘আজ দুঃখের দিন। কংগ্রেস দলের স্তম্ভ ছিলেন আহমেদজি। দলের সবচেয়ে খারাপ দিনেও তিনি পাশে ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের জন্য বেঁচেছেন। উনি দলের বড় সম্পদ ছিলেন। আমরা ওঁর অভাব অনুভব করব। ফৈজল ও তাঁর পরিবারকে আমার সমবেদনা ও ভালবাসা’। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বডঢ়া লিখেছেন, ‘উনি শুধুমাত্র বুদ্ধিমান ও অভিজ্ঞ সহকর্মী ছিলেন তা-ই নয়, এক জন প্রকৃত বন্ধুও ছিলেন। ওঁর সঙ্গে সর্বদা পরামর্শ ও আলোচনা করতাম। তিনি অবিচল, অনুগত এবং নির্ভরযোগ্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বড় শূন্যতা তৈরি হল। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’ অভিষেক মনু সিংভি, দিগ্বিজয় সিংহের মতো আহমেদের সহকর্মীরাও তাঁর মৃত্যুতে শোকবার্তা জ্ঞাপন করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন