নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস ধর্ষণই

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সম্মতিরহিত বলপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে ধর্ষণের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে এখন থেকে তা ধর্ষণ বলেই গণ্য হবে। বুধবার সু্প্রিম কোর্টে বিচারপতি মদন বি লোকুর ও বিচারপতি দীপক গুপ্তর বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।

Advertisement

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সম্মতিরহিত বলপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে ধর্ষণের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সহবাসে সম্মতিজ্ঞাপনের জন্য ন্যূনতম বয়ঃসীমা মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ ধার্য করা হয়েছে। সুতরাং ১৮ বছরের কমবয়সী মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন এমনিতেই ধর্ষণের আওতায় পড়ে। কিন্তু বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা এত দিন প্রযোজ্য ছিল না। অথচ আলাদা ভাবে কিন্তু ১৮ বছরের কমবয়সী মেয়েকে বিয়ে করলে তা বাল্যবিবাহ বলে গণ্য হয়। সেটাও আইনবিরুদ্ধ। আজকের রায় একই সঙ্গে বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন এবং ধর্ষণ আইনের মধ্যেকার ব্যবধানকে ঘুচিয়ে দিল।

এখন থেকে ৩৭৫ ধারায় নাবালিকার বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আর কোনও ছাড় রইল না। অর্থাৎ বাল্যবিবাহের অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা হলে এবং সেই বিয়েতে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে থাকলে এ বার থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জও আনা যাবে। শীর্ষ আদালত বলেছে, ৩৭৫ ধারার ব্যতিক্রমটি সংবিধানের ১৪, ১৫ এবং ২১ নম্বর ধারার বিরোধী, একপেশে এবং শিশুর অধিকারের পরিপন্থী।

Advertisement

ঘটনা হল, দেশে বাল্যবিবাহ আইনবিরুদ্ধ হলেও এই প্রথা আদৌ বন্ধ হয়নি। গ্রামাঞ্চলে তো বটেই, শহরেও ১৫-১৬ বছরে মেয়ের বিয়ে দেওয়া অতি পরিচিত ঘটনা। ১৬-১৭ বছরে মা হওয়াও কিছু ব্যতিক্রম নয়। আবার অনেক সময় ১৫ বা ১৬ বছরের মেয়ের পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার মামলায় আদালতও নানা রকম রায় দিয়েছে। আজ কিন্তু শীর্ষ আদালত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নাবালিকা বিবাহের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল। বিচারপতিদের আক্ষেপ, সংসদে আইনের প্রণয়ন ও সমাজজীবনে তার রূপায়ণের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বাল্যবিবাহ আইনের চোখে অপরাধ হলেও অথচ যুগ-যুগান্তর ধরে চলে আসছে বলে এই রেওয়াজ এখনও সামাজিক ভাবে মান্যতা পায়। এমনটা চলতে দেওয়া যায় না।

তবে বিচারপতিরা আজ এ কথাও পরিষ্কার করে বলেছেন যে, বাল্যবিবাহের অংশটুকু বাদ দিলে সামগ্রিক ভাবে বৈবাহিক ধর্ষণের প্রসঙ্গটি এই রায়ের এক্তিয়ারের বাইরে। কারণ, ৩৭৫ ধারায় নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসকে ধর্ষণের আওতার বাইরে রাখার ব্যতিক্রমটিকে অবৈধ ঘোষণার আর্জি জানিয়ে যে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই রায়। সেই পিটিশনে বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়টি তোলা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন