শহিদ নৌ-সেনা টিমোথি সিংহের সমাধি তৈরির জমি মিলছিল না কাছাড়ে। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেড় বছর পর কবর খুঁড়ে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে আসা হল শিলচরের জেল রোডে। ফের সমাধিস্থ করা হল টিমোথির দেহাবশেষ। এ বার সেখানে প্রয়াত সেনার স্মৃতিতে সৌধ তৈরি করা হবে।
২০১৩ সালের ১৪ অগস্ট মুম্বইয়ে সাবমেরিন বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন টিমোথি। ১১ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃতদেহ কাছাড়ের পয়লাপুলের বাড়িতে পৌঁছয়। টিমোথির বাড়ির পাশে লাবক-পয়লাপুল ব্যাপটিস্ট চার্চের কবরস্থানে তাঁর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয়। ভারতীয় নৌবাহিনী ও অসম পুলিশ তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়।
সমস্যার সূত্রপাত হয় এর পরই। সেখানে টিমোথির সৌধ গড়তে গেলে বিবাদ বাঁধে। ওই নৌ-সেনার বাবা বিদ্যারতন সিংহ গির্জার অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠান। কিন্তু দফায় দফায় বৈঠকের পর গির্জা কর্তৃপক্ষ ওই আবেদন খারিজ করে।
গির্জার তরফে শশাঙ্কশেখর সাহা জানান, পয়লাপুলের কবরস্থানে জায়গা অত্যন্ত কম। তার মধ্যে সৌধ নির্মাণ করা হলে সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া, এক জনকে ওই অনুমতি দেওয়া হলে অন্যরাও তা চাইতে পারে। তার জেরে জেলাশাসক গোকুলমোহন হাজরিকার দ্বারস্থ হন বিদ্যারতনবাবু। জেলাশাসক এ নিয়ে কথা বলেন শিলচর প্র্যাসবেটেরিয়ান চার্চের প্রশাসনিক সচিব তুহিন ঘোষের সঙ্গে। ‘সবুজ সঙ্কেত’ পাওয়ার পর কবর খুঁড়ে টিমোথির মৃতদেহ শিলচরে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আপত্তি করেননি শশাঙ্কবাবুরা। এ দিন বিশেষ প্রার্থনাসভার পর টিমোথির কফিনবন্দি দেহ পয়লাপুল থেকে শিলচরে নিয়ে আসা হয়।
দেড় বছর আগে ভারতীয় জলসীমার প্রহরায় থাকা সাবমেরিনে বিস্ফোরণ হয়। স্ত্রী মিত্রাদেবীকে নিয়ে মুম্বই পৌঁছন বিদ্যারতনবাবু। ১২ দিন পরও ছেলের মৃতদেহের সন্ধান পাননি। ডিএনএ পরীক্ষার পর টিমোথির ঝল্সে যাওয়া দেহাবশেষের হদিস মেলে। তা নিয়ে মাসখানেক পর বাড়ি ফেরেন বিদ্যারতনবাবুরা।
এ নিয়ে শশাঙ্কবাবু বলেন, “ওঁর দুঃখটা বুঝি। কিন্তু আমাদের কিছু নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। আগেও অনেকে একই আবেদন করেছিলেন। তখন সিদ্ধান্ত হয়, ওই কবরস্থানে কারও সৌধ নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হবে না।”