এনডিএ ছাড়লে সমর্থন, সেনাকে বার্তা শরদের

মহারাষ্ট্রে অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করল সঙ্ঘ। নাগপুরে গিয়ে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হল দেবেন্দ্র ফডণবীসকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৪
Share:

শরদ পওয়ার ও উদ্ধব ঠাকরে

মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়ার আশা দেখাল শরদ পওয়ারের দল। তবে তাদের শর্ত, শিবসেনাকে পাকাপাকি ভাবে এনডিএ ছাড়তে হবে। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারে শিবসেনার মন্ত্রীকেও পদত্যাগ করতে হবে। তবেই সেনাকে সমর্থন ও তাদের মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবির কথা ভাববে এনসিপি।

Advertisement

আর আজই মহারাষ্ট্রে অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করল সঙ্ঘ। নাগপুরে গিয়ে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হল দেবেন্দ্র ফডণবীসকে। এই বৈঠকের নেপথ্যে শিবসেনা নেতা কিশোর তিওয়ারির একটি চিঠির ভূমিকা নিয়ে জল্পনা চলছে। ভাগবত এবং নিতিন গডকড়ীকে চিঠি লিখে কিশোর আর্জি জানিয়েছিলেন, মহারাষ্ট্রে জট কাটাতে তাঁরাই হস্তক্ষেপ করুন, কারণ গডকড়ী ‘দুই ঘণ্টায়’ সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন। চিঠিতে কিশোর লিখেছেন, ‘‘বিজেপির, বিশেষ করে অমিত শাহের ঔদ্ধত্ব গোটা প্রক্রিয়াকেই বেসামাল করে দিয়েছে। তিনি (অমিত) দলের রাজ্য নেতৃত্বকে বারণ করেছেন শিবসেনার সঙ্গে কথা বলতে।’’

গডকড়ীকে গোটা ভোটপর্বে কোণঠাসা করে রেখেছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ‘নরেন্দ্র-দেবেন্দ্র’ জোটের কথা। দেবেন্দ্র গত কালই দেখা করেছেন অমিতের সঙ্গে। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, শিবসেনা স্নায়ুর লড়াই চালিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁদের চাপে রাখতে চাইছে। যাতে যত বেশি সম্ভব দাবি আদায় করা যায়। এনসিপি ও কংগ্রেস নেতৃত্ব সেটি বুঝেই পাল্টা চাপ দিচ্ছেন শিবসেনাকে। সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে গত কাল দেখা করেন শরদ পওয়ার। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, বিজেপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে এনসিপি শিবসেনার সঙ্গে মিলে সরকার গড়লে সনিয়ার আপত্তি নেই। কিন্তু কংগ্রেস সেই সরকারে শামিল হবে কি না, তা বিবেচনার বিষয়। অনেকের মতে, এনসিপি-ও আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ চাইতে পারে। কংগ্রেসের বক্তব্য, শিবসেনার হিন্দুত্ব ও অন্য দক্ষিণপন্থী ভাবনার সঙ্গে তাদের মিল নেই। সামনেই অযোধ্যা মামলার রায়। শিবসেনা উগ্র অবস্থান নেবেই। ফলে কংগ্রেসের পরোক্ষ সমর্থন চাইতে হলে শিবসেনাকেও নমনীয় হতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে নাবালক আটক নিয়ে ফের তদন্ত

শিবসেনার অরবিন্দ সবন্ত এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা সরকার গড়তে চাইলে এনডিএ ছাড়ার পাশাপাশি সবন্তকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে বলে আজ দাবি করেছে এনসিপি। আজ কংগ্রেস-এনসিপি একযোগে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে। যদিও বেরিয়ে এসে এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার বলেন, কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা করতেই গিয়েছিলেন তাঁরা।

আর চার দিনের মধ্যে সরকার না-গড়লে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন। ‘মাতোশ্রী’-র সামনে আজ ফের পোস্টার পড়েছে, ‘আমার বিধায়ক, আমার মুখ্যমন্ত্রী’। সঙ্গে ছবি আদিত্য ঠাকরের। উদ্ধব ঠাকরে চান, বিজেপি তাঁদের আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ুক। বিজেপি উপমুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে প্রথমে আলোচনায় রাজি ছিল। কিন্তু পরে জটিলতর হয়েছে পরিস্থিতি। রাজ্য বিজেপি আজও বলেছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়া যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনায় তারা প্রস্তুত। মহারাষ্ট্রের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিল বলেছিলেন, ‘‘আমরা সরকার গড়ার জনাদেশ পেয়েছি। শিবসেনা আমাদের কোনও সূত্র দেয়নি। আলোচনার দরজা ২৪ ঘণ্টা খোলা। সবাইকে নিয়ে সরকার গড়ব, জোট গড়ব দেবেন্দ্র ফডণবীসের নেতৃত্বে।’’ নির্দল বিধায়ক রবি রাণার দাবি, বিজেপিকে বাদ দিয়ে সরকার গড়লে শিবসেনার অন্তত ২৫ জন বিধায়ক যোগ দেবেন বিজেপিতে।

রাতে নজর ঘুরে গিয়েছে নাগপুরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন