নীতীশ কুমার যে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছেন, শুরু থেকেই তাতে আপত্তি ছিল শরদ যাদবের। নীতীশ সরকার গড়ার পরেও বিরোধী মহাজোটের সমর্থনে ‘বিহার বহুজন চৌপাল যাত্রা’য় নামেন শরদ। সমর্থনে এগিয়ে আসেন লালু প্রসাদ। শরদ যাদব যাত্রা শেষ করে পটনায় ফিরলে জোটের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান লালু। দল ভাঙার ইঙ্গিত তখনই ছিল। আর অবশেষে তা যে হতে যাচ্ছে, তা আজ বুঝিয়ে দিলেন নীতীশ ও শরদ— উভয় গোষ্ঠীর নেতারাই।
দিল্লিতে নীতীশকে আজ বিক্ষুব্ধ ওই জেডিইউ নেতাদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘‘দলীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়া হয়। এখন শরদ যাদব চাইলে নিজের রাস্তা নিজে বেছে নিতে পারেন!’’ রাস্তা যে তিনি বেছে নিচ্ছেন তা আজ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির বৈঠকে তাঁর ঘনিষ্ঠ জেডিইউ সাংসদ আলি আনোয়ারকে পাঠিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন শরদ। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকায় আনোয়ারকে রাতে সাসপেন্ড করেছেন জেডিইউ নেতৃত্ব।
নীতীশ শিবির ভাল করেই জানে,
বিহারে শরদ যাদব ও আলি আনোয়ার— কেউই জননেতা নন। ফলে দু’জনকে শাস্তি দেওয়া হলে ভোটবাক্সে তেমন প্রভাব পড়বে না। কিন্তু অন্যতম প্রবীণ নেতা শরদ যাদব। আর আলি আনোয়ার সংখ্যালঘুদের মধ্যে পিছিয়ে পড়ে শ্রেণির প্রতিনিধি। ফলে ওই দু’জনকে শাস্তি দিলে দলে কী প্রতিক্রিয়া হয়, তা বুঝতে চাইছেন নীতীশেরা। আবার শরদের আশা, তিনি দল ভেঙে বেরোলে আনোয়ারের মতো একাধিক বিজেপি-বিরোধী নেতা নীতীশকে ছেড়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়াবেন।
বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে সরকার গড়ার পরে আজই প্রথম বার দিল্লি এলেন নীতীশ। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সংসদে ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে গিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বিহার সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠককে সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলা হলেও, সূত্রের খবর, রাজ্যের আর্থিক প্যাকেজের বিষয়ে মোদীর সঙ্গে একপ্রস্ত কথা হয়েছে নীতীশের। বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার আলোচনার জন্য এ মাসের শেষে নীতীশকে ফের দিল্লি আসতে বলেছেন মোদী। সূত্রের খবর, বিহারে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মোদী রাজ্যের জন্য যে বিপুল আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে তা বাস্তবায়িত করার আর্জি জানান নীতীশ। একই বিষয়ে তাগাদা দিতে আজ দিল্লি এসেছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী সুশীল মোদীও। অর্থ মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি রাজ্যের জমে থাকা দাবি-দাওয়া দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার সওয়াল করেন।