নীতীশের অস্বস্তি রোজ একটু একটু করে বাড়িয়ে তুলছেন শরদ যাদব। —ফাইল চিত্র।
জেডি(ইউ)-তে ফাটল আরও স্পষ্ট করে তুললেন শরদ যাদব। গুজরাতের ধুন্ধুমার রাজ্যসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য প্রবীণ জেডি(ইউ) নেতা অভিনন্দন জানালেন আহমেদ পটেলকে। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের জয় আটকাতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। তবে শেষ হাসি কংগ্রেসই হেসেছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। বুধবার সকালে শরদ যাদব আহমেদ পটেলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। গুজরাতের একমাত্র জেডি(ইউ) বিধায়ক ছোটুভাই ভাসাভা আহমেদ পটেলকে ভোট দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন শরদ যাদব।
‘‘রাজ্যসভা নির্বাচনে কঠিনতম বাধা সত্ত্বেও আপনার জয়ের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন।’’ আজ সকালে টুইটারে এমনই লিখেছেন শরদ যাদব। জেডি(ইউ) নেতৃত্ব এই নির্বাচনে বিজেপি-র পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল গুজরাতের একমাত্র দলীয় বিধায়ককে। কিন্তু শরদ যাদবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গুজরাত জেডি(ইউ) সভাপতি অরুণ শ্রীবাস্তব এবং সে রাজ্যের একমাত্র জেডি(ইউ) বিধায়ক ছোটুভাই ভাসাভা নেতৃত্বের নির্দেশ মানেননি।
নীতীশ কুমার বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর পরেও শরদ যাদব যে ভাবে বিজেপি বিরোধী অবস্থানে রয়েছেন, সে ভাবেই বিজেপি বিরোধিতায় অনড় থাকেন অরুণ শ্রীবাস্তব, ছোটুভাই ভাসাভারাও। দলের গুজরাত শাখা যে তাঁর নির্দেশ মানেনি, সে কথা বুঝতে পারার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অরুণ শ্রীবাস্তবকে দল থেকে বহিষ্কার করেন সর্বভারতীয় সভাপতি নীতীশ কুমার। কিন্তু বুধবার সকালে আহমেদ পটেলকে অভিনন্দন জানিয়ে শরদ যাদব ফের বুঝিয়ে দিলেন, নীতীশ যা-ই করুন, তিনি কংগ্রেসের পাশেই রয়েছেন।
বিজেপির দিকে নয়, কংগ্রেসের পাশেই থাকবেন তিনি। প্রয়োজনে নতুন দল গড়বেন। বেশ কিছু দিন ধরেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন শরদ যাদব। —ফাইল চিত্র।
আরজেডি এবং কংগ্রেসের হাত ছেড়ে নীতীশ বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছেন বিহারে। কিন্তু নতুন সরকার গঠিত হওয়ার কয়েক দিন পর থেকেই দলের প্রাক্তন সভাপতি তথা প্রবীণ নেতা শরদ যাদব বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, নীতীশের সিদ্ধান্তে তাঁর সমর্থন নেই। লালুপ্রসাদ যাদব ইতিমধ্যেই নীতীশের সঙ্গ ত্যাগ করে মহাজোটে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শরদকে। নীতীশের সঙ্গে যে তিনি আর থাকবেন না, বরং তিনি যে আলাদা দল গড়ার কথা ভাবছেন, সে ইঙ্গিত শরদ যাদবও দিয়েছেন। আহমেদ পটেলকে অভিনন্দন জানিয়ে শরদ আরও স্পষ্ট করে দিলেন যে নীতীশের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।
আরও পড়ুন: ১২ ঘণ্টার নাটকের শেষে ফটোফিনিশে জয় আহমেদ পটেলের
আরও পড়ুন: স্মৃতি-অমিতকে জয়ের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
গুজরাতের তিনটি রাজ্যসভা আসনের নির্বাচনে জয়ের জন্য অন্তত ৪৪টি ভোট পেতেই হত যে কোনও প্রার্থীকে। কংগ্রেসের আহমেদ পটেল ঠিক ৪৪টিই পেয়েছেন। ১টি ভোট কম পেলে তিনি হেরে যেতেন। শঙ্করসিন বাঘেলার দলত্যাগের জেরে গুজরাতের কংগ্রেস পরিষদীয় দল যে ভাঙন এবং বিদ্রোহের মুখে পড়েছে, তার জেরেই আহমেদ পটেলের জয় ঘোর অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল। আহমেদ পটেল ৪১ জন কংগ্রেস বিধায়কের সমর্থন পেয়েছেন বলে গুজরাতের রাজনৈতিক শিবির সূত্রের খবর। এনসিপি-র দুই বিধায়কের মধ্যে এক জন, জেডি(ইউ)-এর এক জন এবং জিপিপি-র এক জন তাঁকে ভোট দেওয়ায় আহমেদ শেষ পর্যন্ত ৪৪টি ভোট পেতে সক্ষম হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।