মোদীর গুণ গাইলেন শশী, কংগ্রেস ফাঁপরে

নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর। কিন্তু দলের কেউ কেউ আবার বলছেন, ভুল কিছু বলেননি তিনি। একটি মার্কিন ওয়েবসাইটে তাঁর নিজের কলামে শশী সম্প্রতি লিখেছেন, ‘মোদীকে এত দিন বিভাজনের রাজনীতির মুখ হিসাবেই দেখেছেন তাঁর বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০৩:৪৮
Share:

নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর। কিন্তু দলের কেউ কেউ আবার বলছেন, ভুল কিছু বলেননি তিনি।

Advertisement

একটি মার্কিন ওয়েবসাইটে তাঁর নিজের কলামে শশী সম্প্রতি লিখেছেন, ‘মোদীকে এত দিন বিভাজনের রাজনীতির মুখ হিসাবেই দেখেছেন তাঁর বিরোধীরা। কিন্তু ভোটে জেতার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে সামগ্রিক উন্নয়ন ও সবাইকে নিয়ে চলার কথা বলছেন, তা কিছুটা বিষ্ময়ের। তাঁর এই অবস্থানকে স্বাগত না জানিয়ে কেবল বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিতা করাটা ভুল হবে।’

দলের এক নেতা মোদীর গুণ গাওয়ার পরে আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস মুখপাত্র শোভা ওঝা বলেন, “এটা শশী তারুরের ব্যক্তিগত মত, কংগ্রেসের নয়। নরেন্দ্র মোদী এখনও এমন কিছু করেননি যে তাঁর প্রশংসা করতে হবে।”

Advertisement

যদিও আড়ালে কংগ্রেসের কিছু নেতা বলছেন, তারুর কিছু ভুল লেখেননি। জবরদস্তি বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। নিজের কলামে তারুর লিখেছেন, ‘অনেকেই ভেবেছিলেন যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মোদী ক্ষমতায় এসেছেন, তাতে তাঁদের কট্টর মতাদর্শকে সামনে রেখে এ বার উল্লাস শুরু হবে। কিন্তু মোদী তা করেননি। এমন কোনও সংঘাতময় শব্দও উচ্চারণ করেননি, যাতে সংখ্যালঘুদের ভাবাবেগ আহত হয়। তা ছাড়া, গত সরকারের আমলের বিভিন্ন প্রকল্পের নামকরণ বদলে দেওয়ার জন্য মন্ত্রীরা সক্রিয় হয়ে ওঠায় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিরত করেছেন। বলেছেন প্রকল্পের নাম যাই হোক, যথাযথ ভাবে রূপায়ণ করাটাই মূল কাজ। কট্টরপন্থীদের সরিয়ে রেখে মোদী যে ভাবে নতুন প্রজন্মের নেতাদের মন্ত্রিসভায় এনেছেন, সেটাও ইতিবাচক।’ শশী লিখেছেন, প্রাথমিক ইঙ্গিত উৎসাহজনক।

আসলে এ ধরনের গঠনমূলক প্রশংসা এখনও এ দেশের রাজনীতিতে প্রচলিত নয়। আর সেই কারণেই চাপের মুখে আজ সুর বদলাতে হয়েছে শশীকেও। বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর তারুর আজ বলেন, “আমি মোদী-অনুরাগী নই। বিরোধী দলের সদস্য হিসাবে এর পরেও সরকারের বিরোধিতা করব। কিন্তু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা ঠিক পথ নয়।” এর পরেই শশী ট্যুইট করে বলেন, ‘পুণেতে মহসিন খান নামে এক জন আইটি কর্মীকে যে ভাবে মৌলবাদীরা খুন করেছে, সে দিকে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এমন রাজনীতির কথা কিন্তু মোদী বলছেন না।’

এর আগেও শশীর বক্তব্য নিয়ে বহু বার কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। মন্দার বাতাবরণে যখন কেন্দ্র ব্যয়সংকোচ নীতি নেয়, সেই সময় বিমানের ইকনমি শ্রেণিকে ‘ক্যাটল ক্লাস’ বলে বিতর্কে পড়েছিলেন শশী। নবাগত এই নেতাকে তখন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্য রাজনীতির পাঠ শিখতে পাঠান সনিয়া গাঁধী। প্রণববাবু তাঁকে বুঝিয়েছিলেন, কোনও বিষয়ে মন্তব্য করার আগে সমস্ত স্পর্শকাতর দিক মাথায় রাখতে হয়। মোদীকে আপাত ভাবেও প্রশংসা করলে কংগ্রেসের অনেকেই যে স্পর্শকাতর হয়ে পড়বে, সেটা হয় শশী বোঝেননি, অথবা বুঝেও তোয়াক্কা করেননি।

দলের একাংশের আবার এ-ও সন্দেহ, সনিয়া-রাহুলের সায় নিয়েই এ কথা বলেছেন শশী। সংসদে গঠনমূলক বিরোধিতা গড়ে তোলার বার্তা দিতে চাইছেন। আবার কংগ্রেসের আর এক নেতা আজ বলেন, শশী ভোটে জেতার পর মোদী তাঁকে ট্যুইট করে অভিনন্দন জানান। শশী তাতে আপ্লুত। হতে পারে সেই আবেগের বশেই তিনি একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন