মণ্ডপ সাজাচ্ছেন করিম, গোলাপ শেখ

একমুখ সাদা দাড়ি। পরনে লুঙ্গি। বললেন, ধর্মে যাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁদের কাছে ও সব কোনও ব্যাপার নয়। অন্যদের নিয়ে ভেবে লাভ নেই। তারা সব সময়েই আতঙ্কে। গোলাপ শেখ এগিয়ে এসে জানান, ৪০ বছর ধরে ডেকোরেটরের কাজ করছেন। পুজোমণ্ডপই তো করেন বেশি!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৫০
Share:

ব্যস্ত: মণ্ডপ তৈরির কাজে মগ্ন করিম আলিরা। ছবি: স্বপন রায়

দুর্গাপুজোর মণ্ডপ গড়ছেন গোলাপ শেখ, করিম আলি, সামসুল হক। শিলচরের তারাপুর মোটরস্ট্যান্ডের পুজোর জন্য কেউ চূড়ায় উঠে রশি বাঁধছেন। কেউ কাপড় টানটান করে আলপিন গাঁথছেন।

Advertisement

এমন কাজে অস্বস্তি হয় না? উদ্বেগ? প্রশ্ন শুনে কিছুটা বিরক্তই হলেন করিম আলি। একমুখ সাদা দাড়ি। পরনে লুঙ্গি। বললেন, ধর্মে যাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁদের কাছে ও সব কোনও ব্যাপার নয়। অন্যদের নিয়ে ভেবে লাভ নেই। তারা সব সময়েই আতঙ্কে। গোলাপ শেখ এগিয়ে এসে জানান, ৪০ বছর ধরে ডেকোরেটরের কাজ করছেন। পুজোমণ্ডপই তো করেন বেশি!

ইদ, দুর্গাপুজো দুই উতসবেই সমান আনন্দ তাঁদের। ইদ নিজের পার্বন। আর পুজো এলে রোজগার বাড়ে। শুধু দুর্গাপূজোই-বা কেন, কালীপুজো, বিশ্বকর্মা পুজো এগিয়ে এলেও আনন্দ বোধ করেন তাঁরা। চার দিকে নানা বাদ-বিবাদ তাঁদের কাছে অর্থহীন। পশ্চিমবঙ্গের তুফানগঞ্জ থেকে অসমের শিলচরে এসেছেন এই দলটি। সুকুমার সাহা, নিতাই বিশ্বাসদের সঙ্গে এক ঘরেই থাকেন গোলাপ শেখ, করিম আলি, সামসুল হক। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া। কী খাবেন, কিসে নিষেধ, কেউ কাউকে শিখিয়ে দেন না।

Advertisement

মণ্ডপ বানান বলে নিজের নিজের ধর্মীয় আচরণ থেকে বিরত নন। সময় মতো নমাজও পড়েন। সুকুমারবাবুরা তখন জায়গা ছেড়ে দেন, বলছিলেন সামসুল হক। পুজো কমিটির কর্মকর্তারাও তাঁদের দেখে বিস্মিত। সম্প্রীতির উদাহরণ বটে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন