National News

প্রসূতিকে কাঁধে নিয়ে দূরের হাসপাতালে ছুট লাগাল অন্য পুলিশ!

হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে। গত কয়েক বছর এমনটা দেখেনি সিমলা। চার দিক বরফ-সাদা। ঝুর ঝুর করে ঝরে পড়ছে বরফ। গাছগাছালি, রাস্তা, গাড়ি, দোকানপাট, পাহাড়গাত্র— সর্বত্র ঢেকে গিয়েছে তুলোট বরফে। পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেই চূড়ান্ত ভোগান্তিতে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ২০:২১
Share:

হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে। গত কয়েক বছর এমনটা দেখেনি সিমলা।

Advertisement

চার দিক বরফ-সাদা। ঝুর ঝুর করে ঝরে পড়ছে বরফ। গাছগাছালি, রাস্তা, গাড়ি, দোকানপাট, পাহাড়গাত্র— সর্বত্র ঢেকে গিয়েছে তুলোট বরফে। পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেই চূড়ান্ত ভোগান্তিতে। রাস্তাঘাট থেকে দোকানপাট, স্কুল-কলেজ থেকে রেস্তোরাঁ— সবই বন্ধ। প্রায় অচল দৈনন্দিন জীবন। সেই বিপর্যস্ততার মধ্যেই মানবিকতার এক অন্য কাহিনি শোনাল সিমলা

যাঁর হাত ধরে এই কাহিনির শুরু, তিনি কামিনী। বছর তেইশের ওই যুবতী সন্তাসম্ভবা ছিলেন। গত ৯ জানুয়ারি সন্ধের মুখে হঠাত্ই তাঁর প্রসববেদনা ওঠে। কিন্তু, প্রবল ঠান্ডা ও তুষারপাতের মধ্যে ভন্ড গ্রামের ওই মহিলাকে কী ভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে? চিন্তার ভাঁজ পরিবারের সকলের কপালে। একে তো ভয়ানক ঠান্ডা। তার উপর রাস্তা বন্ধ। এলাকা অন্ধকার, বিদ্যুত্ নেই। গোটা অঞ্চল জুড়ে লোডশেডিং। কে নিয়ে যাবে তাঁকে হাসপাতালে?

Advertisement

উপায় না দেখে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চেয়ে ১০৮-এ ফোন করেন কামিনীর মা। ফোনেই জবাব আসে, এমন পরিস্থিতিতে ওই পরিষেবা পাওয়া যাবে না। রাস্তা বন্ধ। তা ছাড়া প্রবল তুষারপাতের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স কেন, কোনও গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। এর পর হাল ছেড়ে দিয়ে মেয়ের প্রসব যন্ত্রণা দেখা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না কামিনীর মায়ের কাছে।

আরও খবর: গরু একমাত্র প্রাণী যারা বাতাস থেকে অক্সিজেন নেয়, ছাড়েও অক্সিজেন!

সন্ধে পেরিয়ে তখন রাত কিছুটা বেড়েছে। হঠাত্ই দেবদূতের মতো তাঁদের বাড়িতে হাজির হলেন সিমলা পুলিশের ছয় কর্মী। কোথা থেকে খবর পেয়ে তাঁরা এসেছেন, তা জিজ্ঞেস করার ফুরসত পাননি আর কামিনীরা। একটা চৌপায়ায় কামিনীকে চাপিয়ে, গায়ে কম্বল জড়িয়ে তাঁরা রওনা দেন ১০ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালের পথে।

প্রবল ঠান্ডার মধ্যে এক মুহূর্তের জন্য কোথাও থামেননি তাঁরা। অবিরত তুষারপাতকে উপেক্ষা করে টানা প্রায় তিন ঘণ্টা কাঁধে ওই চৌপায়া চাপিয়ে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ হাসপাতাল পৌঁছন কামিনীকে নিয়ে। এর পর কামিনীকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিত্সকেরা কামিনীর অস্ত্রোপচার করেন। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। মা ও মেয়ে দু’জনেই ভাল আছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খুশির বন্যায় ভেসে যাচ্ছে কামিনীর পরিবার। মেয়ে হওয়ার আনন্দের পাশাপাশি ওই পুলিশ কর্মীদের জন্যও গর্বে ভরে উঠেছেন তাঁরা। ওঁরা না থাকলে কী যে হত! ওঁরা যেন ‘অন্য পুলিশ’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন