সাড়া নেই, ‘যাত্রা’ বন্ধ শিবরাজের

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এর কারণ। প্রদেশ বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হচ্ছে, এই যাত্রার পুরোভাগে যিনি ছিলেন, সেই শিবরাজের নির্বাচন সংক্রান্ত অনেক ‘কাজ’ এসে যাওয়ায় প্রচার চালানো আর সম্ভব হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪৬
Share:

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। —ফাইল চিত্র।

কথা ছিল ২৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রেই ছুঁয়ে যাবে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের বহু বিজ্ঞাপিত ‘জন আশীর্বাদ যাত্রা’। কিন্তু বিধানসভা ভোটের একমাস আগেই তড়িঘড়ি তা বন্ধ হয়ে করে দেওয়া হল।

Advertisement

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এর কারণ। প্রদেশ বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হচ্ছে, এই যাত্রার পুরোভাগে যিনি ছিলেন, সেই শিবরাজের নির্বাচন সংক্রান্ত অনেক ‘কাজ’ এসে যাওয়ায় প্রচার চালানো আর সম্ভব হচ্ছে না। দলের কৌশল, প্রার্থী বাছাই এবং ইস্তেহার তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কৈফিয়তের পরেও প্রশ্ন থাকছে। ভোটের আগে দলের প্রধান কাজই হল প্রচার। যখন গ্বালিয়র-চম্বল এবং মালওয়া অঞ্চলের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পৌঁছলই না এই প্রচার, তখন কেন তা বন্ধ করে দেওয়া হবে? ২০১৩-র বিধানসভা ভোটের আগে এই একই যাত্রা চলেছিল ২০৬টি নির্বাচনী কেন্দ্রে। এ বার তা থমকে গেল ১৮৭তেই। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, যে কাজগুলোর ‘অজুহাত’ দিয়ে এই প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হল, সেগুলি তো সমান্তরালভাবে চলারই কথা!

দলীয় সূত্রের মতে, মধ্যপ্রদেশে বিজেপির অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শিবরাজকে সামনে রেখে বিজেপির ঐক্যবদ্ধ চেহারাটিকে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। তিন বারের মু্খ্যমন্ত্রী হিসেবে মধ্যপ্রদেশে শিবরাজের জনপ্রিয়তা যেমন রয়েছে তেমন এটাও ঠিক যে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকার ফলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং ক্ষোভের পাহাড়ও জমেছে দলের ভিতরেই। মধ্যপ্রদেশের কৈলাশ বিজয়বর্গী, নরেন সিংহ তোমার অথবা প্রভাত ঝা (দলের রাজ্যসভার সদস্য)-র সঙ্গে শিবরাজের সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। বিজেপি ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলেও তিনি যাতে ফের মুখ্যমন্ত্রী না হতে পারেন, তার জন্য কোমর বাঁধছেন এই নেতারা। সর্বোপরি বিজেপি শীর্ষ সূত্রের মতে, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের পছন্দের তালিকাতেও শিবরাজ নেই। সব মিলিয়ে ভোটের একমাস আগে বিজেপির একাধিক শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার চিত্রটাই সামনে উঠে আসছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রভাত ঝা আরএসএস তথা সংঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, আরএসএস-ও চাইছে না শিবরাজ ফের মু্খ্যমন্ত্রী হন। কৃষক আত্মহত্যা থেকে ব্যাপম কেলেঙ্কারির মতো বিষয়গুলি নিয়ে যথেষ্ট চাপে দল। আর তার জন্য দলের অভ্যন্তরে অনেকাংশেই দায়ী করা হচ্ছে শিবরাজ সিংহ চৌহানকে।

Advertisement

প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জন আশীর্বাদ যাত্রা বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ— কোনও সাড়াই পাচ্ছে না বিজেপি। রাজ্য কংগ্রেস মুখপাত্র শোভা ঝা-র কথায়, ‘‘সরকারি কর্তা, স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষের অনেকেই যোগ দিচ্ছেন না। মু্খ্যমন্ত্রী যে ব্যাপক হারে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন, তা স্পষ্ট । সেটা ঢাকতেই বিজেপির এই সিদ্ধান্ত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন