মাটি বেচতে গিয়েই বিপাকে সপরিবার লালুপ্রসাদ। পশু কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আপাতত জামিনে মুক্ত লালুর পরিবারের গায়ে নতুন করে শপিং-মল কেলেঙ্কারির তকমা লাগল। আর তা নিয়েই উত্তপ্ত বিহার রাজনীতি। বিহার সরকারের প্রধান জোট শরিক আরজেডি শীর্ষ নেতৃত্বই এখন বিরোধী বিজেপির তোপের মুখে। লালুপ্রসাদের পরিবারের তরফে এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। আরজেডি নেতারাও মুখ খুলতে নারাজ।
বিজেপি নেতা সুশীল মোদী মাটি কেলেঙ্কারির অভিযোগ তোলার পরে আজ শপিংমলে যাদব পরিবারের বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সুশীল মোদীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলার হুমকি দিয়েছেন লালুপ্রসাদের বড় ছেলে, রাজ্যের মন্ত্রী তেজপ্রতাপ। তবে ইতিমধ্যেই মাটি কেলেঙ্কারির বিষয়ে নীতীশ কুমার সরকারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ বিজেপির তরফে সুশীল মোদী অভিযোগ করেন, রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে লালুপ্রসাদ পুনের এক ব্যবসায়ীকে পুরী ও রাঁচীতে রেলের দু’টি অভিজাত হোটেল কম দামে পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তার প্রেক্ষিতে লালু পরিবারের ঘনিষ্ঠ তথা আরজেডির বর্তমান রাজ্যসভা সদস্য প্রেম গুপ্তকে দানাপুরের সগুনা মোড়ে দু’একর জমি কিনে দেন সেই ব্যবসায়ী। প্রেম গুপ্ত দলের কোষাধ্যক্ষ পদেও রয়েছেন। ২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘ডিলাইট মার্কেটিং কোম্পানি’-র নামে ওই জমি কেনা হয়। তখন সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন প্রেম গুপ্ত ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
সুশীল মোদীর দাবি, ২০১০-র পর থেকে লালুপ্রসাদের পরিবারের সদস্যরা সংস্থাতে ঢুকতে শুরু করেন। প্রথমে শেয়ার হোল্ডার, পরে ডিরেক্টর হন তাঁরা। বর্তমানে সগুনা মোড়ের জমির মালিকানা ‘ডিলাইট মার্কেটিং কোম্পানি’ নয়, মালিক ‘লারা প্রোজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড’। বর্তমানে তার তিন ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ীদেবী, বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রী তেজপ্রতাপ যাদব। এই কোম্পানিতে রাবড়িদেবীর ২৪০২টি শেয়ার এবং তেজস্বী ও তেজপ্রতাপের ৮০০টি করে শেয়ার রয়েছে। এই তিন জনই লারা-র শেয়ার হোল্ডার। লারা প্রোজেক্টসই ওই জমিতে সাড়ে সাতশো কোটি টাকা খরচ করে পটনার সব চেয়ে বড় শপিংমল তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন বলে সুশীলের অভিযোগ। এই মল নির্মাণের জন্য কেটে তোলা মাটিই বন দফতরের অধীন ‘পটনা চিড়িয়াখানা’-কে বিক্রি করা হয়েছে।
সুশীলবাবু এ দিন বলেন, ‘‘লারা প্রোজেক্টস আসলে লালুপ্রসাদের ‘লা’ ও রাবড়ীর ‘রা’-এর মিশ্রণ।’’