বাঘ-সিংহের মাংসেও টান, জল্পনা উত্তরপ্রদেশে

গোস্ত না পেয়ে পশুরাজের নাকি গোঁসা হয়েছে— তামাম উত্তরপ্রদেশ জুড়ে এমনই শোরগোল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

গোস্ত না পেয়ে পশুরাজের নাকি গোঁসা হয়েছে— তামাম উত্তরপ্রদেশ জুড়ে এমনই শোরগোল।

Advertisement

লখনউ, কানপুরের চিড়িয়াখানা থেকে এটাওয়ার সিংহ সাফারি— গোস্তের ঘোর আকাল বলেই রাজ্য জুড়ে প্রচার। উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার বেআইনি কসাইখানার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতেই বাঘ-সিংহের পছন্দের খানা, মোষের মাংসে তাই টান পড়েছে।

লখনউ বা কানপুর অবশ্য কোনও ব্যতিক্রম নয়। কলকাতার আলিপুর থেকে মুম্বইয়ের বাইকুল্লা চিড়িয়াখানা— বাঘ-সিংহের নিত্যকার মেনুতে মোষের মাংসই সাজিয়ে দেওয়া হয়। টান পড়তেই সেই পাতে ছাগল-মুরগি ঢেলে দেওয়ায় বেজায় ব্যাজার শ্বাপদেরা। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় বাঘ-সিংহ-হায়েনা-নেকড়ের তা মুখে রুচছে না।

Advertisement

বছর কয়েক আগে, গুজরাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মুলায়ম সিংহ যাদব নিজের এলাকা এটাওয়ায় শখ করে সিংহ-সাফারি তৈরি করেছিলেন। সাফারির ডেপুটি ডিরেক্টর অনিল পটেল জানান, মোষের মাংস জোগাড় করতে গত কয়েক দিনে বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন তাঁরা। সাফারিতে ছোট-বড় মিলিয়ে রয়েছে আটখানা সিংহ। তাদের মন ভেজাতে ছাগল-মুরগি দেওয়া হয়েছিল বটে, তবে তা মুখে তুলতে চাইছে না তারা।

কানপুর চিড়িয়াখানার আধিকারিক সত্যেন্দ্র পাণ্ডে অবশ্য বলছেন, ‘‘বৈধ কসাইখানা তো খোলা রয়েছে, সেখান থেকেই তো আমাদের মাংস আসছে।’’ লখনউ চিড়িয়াখানার এক কর্তার দাবি, ‘‘জানি না, এ কথা কে চাউর করল, তবে, আমাদের চিড়িয়াখানায় বরাবর মোষের মাংস দেওয়া হয়, এখনও হচ্ছে।’’

উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনিক কর্তারা যা-ই বলুন, মাংসাশিদের সমস্যা নিয়ে আজ শোরগোল পড়েছে সংসদেও। কংগ্রেস থেকে বিরোধীরা এ নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছেন, এবার কি বাঘ-সিংহকে পালক-পনীর খাওয়ানো হবে! অধিবেশন মুলতুবির পর কংগ্রেস-নেতারা বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রসিকতা করছেন, আদিত্যনাথের ঝোলায় কি বাঘ-সিংহকেও নিরামিষাশী করে ফেলার দাওয়াই রয়েছে!

তবে, উত্তরপ্রদেশের নবনিযুক্ত বনমন্ত্রী দারা সিংহ চৌহানের যুক্তি, রাজ্যের সমস্ত চিড়িয়াখানা এবং এটাওয়াহের সিংহ সাফারিতে বৈধ কসাইখানা থেকে মাংস পাঠানো হচ্ছে।

সর্বভারতীয় মাংস উৎপাদন ও রফতানি সংস্থাগুলির সংগঠনের কর্তাদের বক্তব্য, আসলে উত্তরপ্রদেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কসাইখানার সংখ্যা মাত্র ১৩০টি। এ ছাড়াও রয়েছে প্রায় এগারোশো লাইসেন্স বিহীন কসাইখানা। যোগী-সরকারের কোপ পড়েছে তাদের উপরেই।

তবে পশুপ্রেমীদের আশা, যোগী আদিত্যনাথ নিজেও ঘোর পশুপ্রেমী। পশুরাজেরা অনশন শুরু করলে নিশ্চয়ই যোগীরাজের মন গলবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন