শবরীমালায় মন্দিরে দুই মহিলার প্রবেশের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের এক জনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বুধবার। ছবি: রয়টার্স
বন্ধে কেরল জুড়ে অশান্তির জন্য বিজেপিকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। শবরীমালা মন্দির ইস্যুতে হরতাল-বিক্ষোভে বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিই উস্কানি দিচ্ছে, মন্তব্য বিজয়নের। অন্য দিকে বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার কেরল বন্ধে কেরলের বিভিন্ন প্রান্তে বন্ধ সমর্থনকারীদের তাণ্ডবের খবর মিলেছে। বাস ভাঙচুর, অবরোধ বিক্ষোভে উত্তাল কার্যত গোটা রাজ্য।
বুধবার কাকভোরে বছর চল্লিশের দুই মহিলা বিন্দু এবং কনকদুর্গা শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেন। তার পর দর্শনার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘণ্টাখানেক ধরে ‘শুদ্ধিকরণ’ হয় মন্দিরে। অন্য দিকে, ঘটনার পর থেকেই কেরলের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। রাস্তা অবরোধ, জোর করে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে বিভিন্ন জায়গায়। এমনকি, সচিবালয়ের সামনে খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির যুব মোর্চার সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয় শবরীমালা কর্ম সমিতি-সহ কয়েকটি সংগঠন। তার মধ্যেই বুধবারের বিক্ষোভে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় আজ বৃহস্পতিবার। হরতালের জেরে রাস্তা অবরোধ, ভাঙচুর চলছিলই। মৃত্যুর খবরে আগুনে ঘি পড়ে। এর পরই কার্যত তাণ্ডব শুরু করেন বন্ধ সমর্থকরা। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী তিরুঅনন্তপুরম, কালিকট, মালাপ্পুরম-সহ বিভিন্ন জায়গায়। ত্রিশুরে একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। সিপিএম সমর্থকদের পাঁচটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। বন্ধ রাখা হয়েছে কর্নাটক স্টেট ট্রান্সপোর্টের কেরলে চলাচল করা সমস্ত বাস। রাজ্য জুড়ে কালা দিবস পালন করছে ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ)।
শবরীমালা কর্ম সমিতির নেতা কে পি শশীকলা মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁরা অবরোধ-বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। কেরলের সাধারণ মানুষকেও বন্ধ সমর্থনের আবেদন করেছেন।
আরও পডু়ন: ইতিহাস! শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ দুই পূজারিনির, প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল কেরল
আরও পড়ুন: বুলন্দশহর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নেতাকে পুলিশে দিল বজরং দল
উল্টো দিকে রাজ্য জুড়ে অশান্তির জন্য বিজেপিকে দায়ী করে বিজয়ন বলেন, ‘‘শবরীমালা ইস্যুতে এটা বিজেপির পঞ্চম বন্ধ। আর সঙ্ঘ পরিবার ধরলে এটা গত তিন মাসে রাজ্যে সপ্তম হরতাল। ওদের কাছে এটাই শেষ রাস্তা। দুর্ঘটনা, মৃত্যু বা আত্মহত্যাকেও শবরীমালার সঙ্গে জুড়ে এই বন্ধ-অবরোধের রাজনীতি করে যাচ্ছে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্ট সব বয়সের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এই সব আন্দোলন করার অর্থ শীর্ষ আদালকে অবমাননা করা।