ফোন ধরেই চিত্কার করে উঠলেন এক আরজেডি সমর্থক, ‘‘এখনই চলে আসুন। মিছিল শুরু হল বলে।’’
আধঘণ্টা কেটে গেল। কোথায় মিছিল! মিছিলের কর্মসূচি কী বাতিল! কোনও আরজেডি সমর্থক তখন বলছেন, ‘‘রাজভবনের চার দিকে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। তাই মিছিল বাতিল।’’ আর এক সমর্থকের ব্যাখ্যা: আসলে প্রচুর পুলিশ দিয়েছে। সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে।
লালুপ্রসাদ সকাল থেকে সিবিআইয়ের ঠেলায় রাঁচিতে। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা তেজস্বী যাদব ঘরবন্দি। হাতে গোনা চেনা সাংবাদিক ছাড়া কারও সঙ্গে দেখাই করেননি দিনভর। দুপুরে আরজেডি-র চার নেতা—রামচন্দ্র পূর্বে, আব্দুল বারি সিদ্দিকি, জগদানন্দ সিংহ, মনোজ ঝা-রা নীতীশ কুমারের চক্রান্তের দিকে, রাজ্যপালের পক্ষপাতিত্বের দিকে আঙুল তুলতে ব্যস্ত। কিন্তু তেজস্বীই বা কেন উদ্ভুত দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন না? প্রশ্ন সন্তর্পণে এড়িয়ে গেলেন তাঁরা। দুপুরে বীরচন্দ পটেল পথে মিছিল একটা হল বটে। কিন্তু তাতেও হাতেগোনা সমর্থক। পুলিশ আর সাংবাদিকরা সংখ্যাধিক্য। অর্থাৎ রাতারাতি ‘ক্ষমতাচ্যূত’ আরজেডি সমর্থকরা এখন দিশাহারা। নেতারাও।
এর মধ্যেই দলের মধ্যে দানা বাঁধছে বিরুদ্ধ-স্বর। মুজফ্ফরপুরের বিধায়ক মহেশ্বর যাদব তো প্রকাশ্যেই বলে দিলেন, ‘‘লালুজি ঠিক করেননি। তেজস্বীকে ইস্তফা দিইয়ে প্রবীণ কোনও নেতাকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা উচিত ছিল।’’ তাঁর দাবি, বহু আরজেডি বিধায়কেরই এই অভিমত। স্বীকার করলেন লালুর ভয়েই তাঁরা চুপ করেছিলেন।
গুঞ্জন জেডিইউয়ের মধ্যেও। এক বিধায়কের কথায়, ‘‘বিজেপি-র বিরোধিতা করে জিতে এসেছি। এখন রাতারাতি আবার তাদেরই গুণগান করলে মানুষই কী বলবে!’’ তবে তিনিও নেতার ভয়ে ভীত। খবর পেয়েছেন, দিল্লিতে সাংসদ শরদ যাদব, আলি আনোয়ার নীতীশের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। কিন্তু সেই ক্ষোভ বিদ্রোহের আকার নিতে পারবে না বলেই আত্মবিশ্বাসী জেডিইউ নেতারা। নীতীশ-ঘনিষ্ঠ এক নেতার দাবি, ‘‘এ সব বিদ্রোহ নীতীশ কুমারের সামনে ধোপে টিকবে না। একবার ওঁকে গুছিয়ে নিতে দিন। সব ঠিক হয়ে যাবে।’’ কারণ দলে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কোনও নেতাকে নীতীশ আর রাখেননি।