বরাকে দেশবন্দনায় মাতল দিশারী

আশির দশকে অসম জুড়ে ছড়িয়েছিল অস্থিরতা। ভাষা-জাতি-ধর্মের নামে বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা চলচিল গোটা রাজ্যে। তখন যে কয়েকটি সংগঠন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে অসমবাসীকে সঠিক পথ দেখিয়েছিল, দিশারী তাদের অন্যতম।

Advertisement

সুপ্রদীপ দত্তরায়

শিলচর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২০
Share:

দিশারীর অনুষ্ঠানে সঞ্জীব দেবলস্কর। স্বপন রায়ের তোলা ছবি।

আশির দশকে অসম জুড়ে ছড়িয়েছিল অস্থিরতা। ভাষা-জাতি-ধর্মের নামে বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা চলচিল গোটা রাজ্যে। তখন যে কয়েকটি সংগঠন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে অসমবাসীকে সঠিক পথ দেখিয়েছিল, দিশারী তাদের অন্যতম। বরাকের বিদ্বজ্জন, শিল্পীদের ওই মঞ্চ শুধু শিলচর নয়, গোটা উপত্যকা জুড়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিল। বরাকের অভিমান রক্ষা করেও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানে সেতুবন্ধন সম্ভব, দিশারীই দেখিয়েছিল তা-ও।

Advertisement

এ বার এনআরসি, আদি বাসিন্দা নিয়ে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী শঙ্কিত। নাগরিকত্ব প্রমাণের মাপকাঠি ক্রমে জটিল হচ্ছে, নিজেদের অস্তিত্ব সঙ্কটের ঠিক সেই মুহূর্তে ফের এগিয়ে এল দিশারী। সম্প্রতি শহিদ ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে আয়োজন করল দেশাত্মবোধক গানের অনুষ্ঠান ‘দেশবন্দনা’। শুরুতেই সংস্থার সভাপতি সঞ্জীব দেবলস্কর বর্তমান প্রেক্ষাপট ও অনুষ্ঠানের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেন। দিশারীর সহ-সভাপতি গৌতমপ্রসাদ দত্ত তাঁর ভাষণে এনআরসি ও নাগরিকত্বের প্রশ্নে যে সব সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে দর্শকদের অবগত করেন। দিশারীর শিল্পীরা পরিবেশন করেন দেশাত্মবোধক সমবেত সঙ্গীত। পরে একে একে শহরের আমন্ত্রিত সংগঠন স্বরলিপি, শিল্পী সংসদ, খেয়া-র সদস্যরা আবৃত্তি ও সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন। দেশাত্মবোধের এই ভাবনা দর্শকদের উদ্বুদ্ধ করে। শিল্পীদের সমবেত সঙ্গীত নৃত্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। সংগঠনের প্রধান কর্মকর্তা সঞ্জীববাবু ও গৌতমবাবু এনআরসি-নাগরিকত্ব প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। দেশমাতৃকার সন্তানরা কী সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন, তা সাংস্কৃতিক কর্মীদের কাছে এমন ভাবে ধরা পড়ার ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে শিল্পীদের সঙ্গীত বাছাইও দিশারী আয়োজিত অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী পুরকায়স্থ। সঞ্চালনা পর্বও এক বিশেষ শিল্প, সব্যসাচীবাবু তা আরও একবার প্রমাণ করলেন। সংগঠনের সদস্যদের বক্তব্য, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিশারী, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক কর্মীদের কাছে যে বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছে, শীঘ্র তা উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়বে। সেই পথ ধরেও বেরিয়ে আসতে পারে সমাধানের রাস্তা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন