শ্রীজাত।—ফাইল চিত্র।
ক্ষতটা শুকোচ্ছে না শিলচরের। বিশেষ করে কবি-শিল্পীদের কাছে। যাঁদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ। গত ১২ জানুয়ারি কবিতা শোনানো ও ছবি আঁকার জন্য বড় একটা মঞ্চ পেয়েছিলেন তাঁরা। নতুন এক সংগঠনের আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে। কবিরা তাঁদের কবিতা পাঠ করবেন, শিল্পীরা ক্যানভাসে তা ফুটিয়ে তুলবেন। তা-ও আবার কবি শ্রীজাতের সামনে। হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণে তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। একে বড় আঘাত বলেই মনে করছেন তাঁরা।
আট জন কবি ও আট জন চিত্রশিল্পীকে একমঞ্চে আনার দায়িত্বে ছিলেন অধিষ্ঠিতা শর্মা। তাঁর কথায়, ‘‘অনুষ্ঠানের এই পর্বের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছিলাম। কিন্তু করা গেল না। কত দিন যে এই আক্ষেপ বয়ে বেড়াতে হবে!’ শান্তনু আচার্য ছিলেন শিল্পীদলের নেতা। কবিদের সঙ্গে কথা বলা, কবিতা বুঝে নেওয়া, সেই সঙ্গে চিত্রকল্প তৈরি---বেশ খেটেছিলেন তিনি। তাঁর দুঃখ, সব মার খেয়ে গেল! বিশ্বরাজের কথায়, ‘‘শ্রীজাতের সামনে কবিতা বলব, আর সেই কবিতা ক্যানভাসে ফুটে উঠবে! এক অন্য অনুভূতি কাজ করছিল। তা করতে না-পারার যন্ত্রণাটা যাবে না।’ তবে শ্রীজাতের অপদস্থ হওয়ার ঘটনা অন্য কারণে বেশি আঘাত করেছে বিশ্বরাজকে। তাঁর কথায়, ‘কবির শহর শিলচর’— এই ঐতিহ্যটা আর বহন করা গেল না।
আয়োজক সংস্থার মুখ্য আহ্বায়ক সব্যসাচী রুদ্রগুপ্ত অবশ্য জানিয়েছেন, কবি-শিল্পীদের অনুষ্ঠানটি তাঁরা শীঘ্রই করবেন। সেখানে হয়তো শ্রীজাতকে আর পাওয়া যাবে না। কবিকে এনে উপযুক্ত সুরক্ষা দিতে না-পারায় সব্যসাচী নিজেও কাঠগড়ায়। দু’দিন আগে শিলচরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের জোট সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ সে দিনের ঘটনা পর্যালোচনা করে। বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি সব্যসাচীকেও দুষেছে তারা।