আধুনিক না হয়েও ধুবুরির এক নম্বর

নেই রকমারি আলোকসজ্জা। মণ্ডপসজ্জার আতিশয্যও নেই। পঞ্জিকার বিধান আর নিষ্ঠাই পুজো মূল আকর্ষণ। এ বছরও পুরনো বৈদিক রীতি মেনেই পুজোর আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে ধুবুরি হরিসভার দুর্গাপুজো কমিটিতে। ধুবুরিতে সবচেয়ে প্রাচীন এই পুজোর প্রস্তুতি ঘিরে প্রতি বারের মতোই উৎসাহ তুঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধুবুরি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৮
Share:

নেই রকমারি আলোকসজ্জা। মণ্ডপসজ্জার আতিশয্যও নেই। পঞ্জিকার বিধান আর নিষ্ঠাই পুজো মূল আকর্ষণ। এ বছরও পুরনো বৈদিক রীতি মেনেই পুজোর আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে ধুবুরি হরিসভার দুর্গাপুজো কমিটিতে। ধুবুরিতে সবচেয়ে প্রাচীন এই পুজোর প্রস্তুতি ঘিরে প্রতি বারের মতোই উৎসাহ তুঙ্গে।

Advertisement

পুজো উদ্যোক্তারা জানান, বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ইতিমধ্যেই পুজোর আয়োজন থেকে প্রতিমা তৈরির খুঁটিনাটির ব্যাপারে রুটিন মাফিক খোঁজখবর নিচ্ছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক প্রদীপকুমার দেব (বিজুদা) জানান, এ বছর পুজোর ১৩০তম বর্ষ। ধুবুরি শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে স্থায়ী পাকা মন্দিরে পুজো হয়। উদ্যোক্তারা জানান, ১৮৮৭ সালে প্রথম ওই এলাকাতেই টিনের একচালায় কাঁচা মাটির ঘরে দুর্গাপুজো শুরু হয়। সেই সময় কমিটির সভাপতি ছিলেন পাটামারি গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী প্রয়াত মতিলাল লাহিড়ি। কিন্ত শুরু থেকেই ধুবুরির বাসিন্দাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া রয়েছে ওই পুজোয়। ষষ্ঠীর দিন কলাবউকে স্নান করানো হয় ব্রহ্মপুত্র নদীতে নিয়ে গিয়ে। দেবী পুরাণ এবং কালিকা পুরাণের মিশেলে লেখা পুঁথি দেখে মন্ত্রোচ্চারণ করেন পুরোহিত। আবশ্যিক উপকরণের তালিকায় রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদীর জল, ১০৮টি পদ্মফুল। শুরুতে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করতেন প্রয়াত তর্কতীর্থ চক্রবর্তী। বর্তমানে এই দায়িত্ব পালন করছেন ধুবুরির দেবশঙ্কর চৌধুরী।

ধুবুরি হরিসভার নিজস্ব নাট মন্দিরে শুরুতে প্রতিমা তৈরি করতেন ধুবুরির বিশিষ্ট মৃৎশিল্পী প্রয়াত কার্তিক পাল। বংশানুক্রমিক ভাবে একই রকমের প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব পালন করছেন কার্তিকবাবুর ছেলে অজয় পাল। প্রতিমা হয় সাবেকি ধাঁচের। প্রতিমার ডাকের সাজও এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। পুজো দেখতে বেরিয়ে প্রথমেই ধুবুরি হরিসভার মণ্ডপে এসে প্রণাম করে যান ধুবুরির বাসিন্দারা।

Advertisement

উদ্যোক্তারা জানান, ফি বছরের মতো ষষ্ঠীর দিন ভক্তিমূলক গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। সপ্তমীর দিন মহিলাদের জন্য থাকবে বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতা। এ ছাড়াও পুজোর আর এক আকর্ষণ হচ্ছে ঢাক প্রতিযোগিতা। বিজয়া দশমীতে রাজ্য এবং ভিন রাজ্য থেকে ধুবুরির বিভিন্ন মণ্ডপে বাজাতে আসা ঢাক শিল্পীরা তাতে যোগ দেন। কমিটির সভাপতি সৌরীন্দ্রভূষণ রায় জানান, “এই পুজোয় আগে পশু বলির রেওয়াজ ছিল। তবে সেটা বহু দিন আগেই বন্ধ হয়েছে। এখন শুধু চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। আধুনিকতা না থাকলেও এটাই ধুবুরির এক নম্বর পুজো।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন