‘এক চড়েই কেঁপে গিয়েছিল মাসুদ’

মাসুদকে প্রথম বার জেরা করার সেই অভিজ্ঞতা বছর পনেরো পরে আজ সংবাদমাধ্যমকে জানালেন সিকিম পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অবিনাশ মোহনানে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

এক চড়েই ঠান্ডা! জেরায় কেঁচোর মতো কুঁকড়ে গিয়ে গলগল করে সব উগরে দিয়েছিল জইশের মাথা মাসুদ আজহার। তবে ঠান্ডা গলায় হুমকি দিতেও ছাড়েনি সে— ‘‘আপনাদের পুলিশ কিন্তু আমায় আটকে রাখতে পারবে না। আইএসআই ঠিক ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে।’’

Advertisement

মাসুদকে প্রথম বার জেরা করার সেই অভিজ্ঞতা বছর পনেরো পরে আজ সংবাদমাধ্যমকে জানালেন সিকিম পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অবিনাশ মোহনানে। ইন্টেলিজেন্স বুরোর কাশ্মীর ডেস্কেও তিনি ছিলেন বেশ অনেকটা সময়। জানালেন, তিনি একাধিক বার জেরা করেছেন ‘দুর্ধর্ষ’ মাসুদকে।

প্রথম জেরা ১৯৯৪-এ। সংসদ থেকে শুরু করে, পঠানকোট, উরি এবং সাম্প্রতিক পুলওয়ামার মতো ভারতে ভয়াবহ কয়েকটি জঙ্গি হামলা চালানো জইশ-ই-মহম্মদ তখনও তৈরি হয়নি। পাকিস্তান থেকে পর্তুগিজ পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢুকেছিল মাসুদ। ছক ছিল, বিচ্ছিন্নতাবাদের জিগির তুলে কাশ্মীরে তুমুল গন্ডগোল পাকানো। কিন্তু এ নিয়ে আরও কিছুটা এগোনোর আগেই সে বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে তাকে অনন্তনাগ থেকে পাকড়াও করে পুলিশ। শুরু হয় জেরা।

Advertisement

আর তাতে যে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি, জানালেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘গোড়ায় গাঁইগুঁই করছিল। কিন্তু এক সেনা অফিসারের চড় খাওয়া মাত্রই দেখলাম মাসুদ কাঁপতে শুরু করেছে। তার পর আর আমাদের বিশেষ কিছু করতে হয়নি, নিজের গতিবিধি, কাশ্মীরের ছক পুরোটাই কবুল করেছিল।’’

১৯৯৩-এ মাসুদ তখন করাচির এক ট্যাবলয়েডের সাংবাদিক। ‘মুক্ত কাশ্মীর’ দাবিকে জোরদার করতে সে বছরই বেশ কয়েকটি দেশে যায় সে। গোয়েন্দাদের দাবি, তখনই আফগানিস্তানে তালিবান এবং আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়ে যায়। কাশ্মীরে যে আফগান জঙ্গিরাও গন্ডগোল পাকাতে চাইছে, প্রথম বার জেরায় নিজেই তা স্বীকার করে মাসুদ।

কিন্তু জেরার মুখে কাঁপতে কাঁপতেও তার ঠান্ডা গলার সেই হুমকি এখনও ভুলতে পারেন না প্রাক্তন পুলিশকর্তা অবিনাশ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম দিনই মাসুদ বলেছিল, ‘আমার জনপ্রিয়তা আপনারা বুঝতে পারছেন না। আমি যাতে পাকিস্তানে ফিরতে পারি, সেই ব্যবস্থা করবে আইএসআই-ই।’ বাস্তবেও তাই হল।’’

১৯৯৯-এর ২৪ ডিসেম্বর কাঠমান্ডু থেকে দিল্লিগামী আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ করে তালিবান। অমৃতসর, লাহৌর, দুবাই হয়ে তা পৌঁছয় আফগানিস্তােনর কন্দহরে। উদ্দেশ্য, মাসুদকে ছাড়ানো। চাপে পড়েই জঙ্গিদের কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয় তৎকালীন বিজেপি সরকার। ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, পাক গুপ্তচর সংস্থার মদত না-পেলে মাসুদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারত না তালিবান জঙ্গিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন