বোকা বাক্সেও কি তবে স্মৃতির হানা!

ক’দিন আগেই ভুয়ো খবর রুখতে চেয়ে সাংবাদিকদের শাস্তির বিধান দিয়েছিলেন। চাপের মুখে সে প্রস্তাব গিলতে হয়েছে। এ বার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি আম আদমির বৈঠকখানায় নজরদারি চালানোর প্রস্তাব এনেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৬
Share:

ক’দিন আগেই ভুয়ো খবর রুখতে চেয়ে সাংবাদিকদের শাস্তির বিধান দিয়েছিলেন। চাপের মুখে সে প্রস্তাব গিলতে হয়েছে। এ বার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি আম আদমির বৈঠকখানায় নজরদারি চালানোর প্রস্তাব এনেছেন।

Advertisement

কী রকম? বাড়িতে বসে টিভিতে কে কত ক্ষণ ধরে কোন চ্যানেল দেখছেন, সেটাও এ বার লক্ষ রাখতে চায় সরকার। স্মৃতির প্রস্তাব, টেলিভিশনের সেট-টপ বাক্সে একটি চিপ ঢোকানো থাকবে। তা থেকেই জানা যাবে, কোন বাড়িতে কোন চ্যানেল কত ক্ষণ দেখা হচ্ছে।

কিন্তু কেন? একদা টিভির বিখ্যাত অভিনেত্রী এখন আমজনতার টিভির পর্দায় কেন উঁকি মারতে চান? মন্ত্রকের যুক্তি, কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞাপনদাতা দফতর ডিএভিপি এবং বেসরকারি বিজ্ঞাপনদাতারা সবাই এতে উপকৃত হবেন। তাঁরা যাবতীয় অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাবেন। যে সব চ্যানেল বা অনুষ্ঠান বেশি জনপ্রিয়, সেগুলি এর ফলে বেশি বিজ্ঞাপন পাবে।

Advertisement

এত দিন এ ক্ষেত্রে বিএআরসি (ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল)-র সমীক্ষাই ভরসা ছিল। মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, বিএআরসি-র সমীক্ষায় পূর্ণাঙ্গ চিত্র ধরা পড়ে না। তাঁদের মতে, দূরদর্শনের দর্শক সংখ্যা সমীক্ষায় যা আসে, বাস্তবে তার চেয়ে বেশি। সেট-টপ বক্সে চিপ থাকলে সঠিক দর্শক সংখ্যা ধরা পড়বে বলে তাঁদের দাবি। মন্ত্রক তাই টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রাই-এর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে, ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট-টু-হোম) অপারেটরদের সেট-টপ বাক্সে চিপ রাখতে বলা হোক।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশে সাংবাদিকদের শাস্তিবিধান থেকে পিছু হটতে হয়েছিল স্মৃতিকে। এখন আবার এই নতুন প্রস্তাবকে ঘিরেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। যেমন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা অভিযোগ করছেন, ‘‘আপনি চার দেওয়ালের মধ্যে টিভি-তে কী দেখছেন, আপনার অনুমতি ছাড়াই স্মৃতিজি তা জানতে চান। ব্যক্তি পরিসরের অধিকার তো ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে এতে।’’ সরকারের সমীক্ষায় যে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে, তারই বা কী নিশ্চয়তা, প্রশ্ন সেখানেও। কোনও বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম কেন্দ্রীয় সরকারের অপছন্দের খবর প্রচার করলে, সরকার তার জনপ্রিয়তা কম করে দেখিয়ে বিজ্ঞাপন ছাঁটাই করার চেষ্টা যে করবে না, তা কী করে নিশ্চিত হওয়া যাবে, প্রশ্ন বিরোধীদের। আগের লোকসভা ভোটে মোদীর স্লোগান ছিল, ‘অব কি বার, মোদী সরকার’। তাকেই কটাক্ষ করে কংগ্রেস আজ আওয়াজ তুলেছে, ‘অব কি বার, সার্ভেল্যান্স সরকার’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন