উপত্যকা বিভিন্ন জায়গা জুড়ে লাগাতার ধসে ক্রমশ বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। গত দু’দিনে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও শুক্রবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩। তবু তার মধ্যেও এক সেনার বেঁচে ফেরার ঘটনাই আশা জোগাচ্ছে উদ্ধারকারীদের মনে।
প্রায় তিন ঘণ্টা ১২ ফুট বরফের গভীরে আটকে ছিলেন মেজর শ্রীহরি কুগাজি। বাঁচার আশা প্রায় ছিল না বললেই চলে। তবু অসম্ভব মনের জোরকে সম্বল করেই যুদ্ধ জয় করেছেন বেলাগাভির এই বাসিন্দা।
উদ্ধারের পর মেজর শ্রীহরি জানিয়েছেন সেই অভিজ্ঞতা। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নিজের তাঁবুতেই ঘুমোচ্ছিলেন মেজর। হঠাৎ তাঁর মাথায় একটি লোহার পাত এসে পড়ে। খাট থেকে পড়ে যান তিনি। চারপাশ বরফে ঢেকে গিয়েছিল। প্রথমে না বুঝলেও পরে বোঝেন তাঁবুটি বরফের ধসের তলায় চাপা পড়েছে। শ্বাস নেওয়া কঠিন হচ্ছিল। তবু ঘাবড়াননি মেজর। একটা ছোট্ট গর্ত দিয়ে হাওয়া খেলছিল। তবে ওই ভয়ঙ্কর ঠান্ডায় জমে প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কাটাই ছিল সব থেকে বেশি। নিজের মুখের ভিতর আঙুল ঢুকিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছিলেন মেজর। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে বরফের তলা থেকে শ্রীহরিকে উদ্ধার করা হয়। তবে বাঁচানো যায়নি আরও এক মেজর অমিত সাগরকে।
সেনা সূত্রের খবর, উপত্যকার কিছু জায়গায় শুক্রবারও জারি রয়েছে ভারী তুষারপাত ও বৃষ্টি। তার সঙ্গে ধস নামায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় বান্দিপোরা জেলার গুরেজ সেক্টরে পর পর দু’টি ধসে বরফের নীচে চাপা পড়ে যায় একটি সেনা ক্যাম্প ও জওয়ানদের একটি টহলদার বাহিনী। সাত জন সেনাকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও প্রাণ হারান ১১ সেনা–সহ ১৯ জন। নিখোঁজের সংখ্যা ছিল ৪। শুক্রবার ওই চারটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ধস নামে বারামুলা জেলার বানিহালে।
উপত্যকা জুড়ে এখনও জারি রয়েছে তুষারধসের সতর্কতা। খালি করে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি গ্রাম। শুক্রবার আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হলে খুলে দেওয়া হয় শ্রীনগর বিমানবন্দর। তবে চার দিন ধরে বন্ধ জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক।