সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে আগামিকাল। তার পর বিজেপির বিরুদ্ধে কী ভাবে এগনো হবে, তা ঠিক করতে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করলেন সদ্য রাজ্যসভায় জিতে আসা কংগ্রেস নেতা তথা সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল। সন্ধেয় মমতার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠকে ঠিক হয়েছে, তাড়াহুড়ো না করে ধাপে ধাপে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ ১৮ টি বিরোধী দল একজোট হয়ে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলবে।
আগামিকাল বিকেলে সংসদের অ্যানেক্স ভবনে সনিয়া গাঁধীর উপস্থিতিতে বিরোধী দলগুলির যে বৈঠক হবে, তাতে যোগ দেবেন মমতা। কিন্তু তার আগে বৈঠকের কর্মসূচি ও রণকৌশল চূড়ান্ত করতে সনিয়ার নির্দেশে মমতার সঙ্গে আজ দেখা করেন আহমেদ পটেল। সঙ্গে ছিলেন সাংসদের ছেলে ও নাতনি। কংগ্রেসে আহমেদ পটেল প্রবীণ নেতা। তিনি এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা হওয়ার সুবাদে মমতার সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। মমতা কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাতে চান না। তিনি মনে করেন, বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রবীণ-নবীন নেতারা একসঙ্গে লড়াই জারি রাখলে আন্দোলন শক্তিশালী হবে।
আরও পড়ুন: আনসারির খোঁচা, পাল্টা বেঙ্কাইয়ার
আজকের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যে সব রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তি কম, সেখানে শরিক দলগুলিকে বেশি গুরুত্ব দেবেন সনিয়া-রাহুলরা। সেই সব রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনের ভার শরিক দলের উপরেই ছেড়ে দেবে কংগ্রেস। যেমন উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী ও অখিলেশ— দু’পক্ষের সঙ্গে কংগ্রেস সমন্বয় রেখে চলবে। ওই রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের মূল দায়িত্ব তাঁদের হাতেই তুলে দেবেন রাহুলরা। কংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার পথে হাঁটবে না। বিহারে লালুপ্রসাদ, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে, মহারাষ্ট্রে এনসিপির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই আন্দোলনে
নামবে কংগ্রেস।
আর এখনই বিরোধী জোটের নেতা হিসেবে কারও নাম তুলে না ধরে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে— সেই বিষয়গুলি দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরাই বিরোধীদের মূল লক্ষ্য হবে। ফলে রাহুল গাঁধী কংগ্রেসের নেতা নির্বাচিত হলেও, বিরোধী মঞ্চ থেকে কোনও এক জন নেতাকে তুলে ধরা হবে না। বরং বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন নেতার নেতৃত্বে আন্দোলন হবে। আগামী ২৮ অগস্ট লালুপ্রসাদের ডাকা পটনার জনসভাতে যাতে সমস্ত বিরোধী দলগুলির প্রতিনিধি উপস্থিতি থাকে, তা নিশ্চিত করা নিয়েও আলোচনা হবে আগামিকালের বৈঠকে।
এর আগে আজ দুপুরে দিল্লিতে নেমেই সদ্য নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেন মমতা। রাষ্ট্রপতিকে কলকাতা যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে বলা হয়েছে, এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ। নির্বাচনের সময়ে বিরোধিতা করলেও, সাংবিধানিক শিষ্টতা মেনেই এই বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন রাষ্ট্রপতির জন্য কলকাতা থেকে উপহার ও মিষ্টি নিয়ে এসেছিলেন মমতা।