National News

লক্ষ্য ঐক্য, আজ সন্ধ্যায় মুখোমুখি সনিয়া-মমতা

সন্ধ্যায় ১০ জনপথে বৈঠকে মুখোমুখি হচ্ছেন সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি বিরোধী লড়াই কোন পথে, আলোচনা হবে তা নিয়েই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ১৬:৫৬
Share:

রাহুলের নেতৃত্ব মানতে মমতা নারাজ। কিন্তু তার জন্য সনিয়ার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কে যে কোনও প্রভাব পড়বে না, ১০ জনপথে বুধবার সন্ধ্যার বৈঠকেই তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। —ফাইল চিত্র।

অল্পের জন্য দেখা হয়নি মঙ্গলবার। দু’জনেই একই সময়ে সংসদে ছিলেন। তবু কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রীর সঙ্গে তৃণমূলনেত্রীর সাক্ষাৎ হয়নি। কেন হল না সাক্ষাৎ? সনিয়া-মমতা কি এড়ালেন পরস্পরকে? জল্পনা শুরু হয়েছিল রাজধানীর রাজনৈতিক অলিন্দে। কংগ্রেসকে নেতৃত্বে রেখে কোনও জোট গড়ার প্রস্তাবে সম্মতি দিতে মমতা যে নারাজ, তার জেরেই কি দূরত্ব তৈরি হল? এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছিল। তবে সব প্রশ্নের অবসান ঘটল বুধবার। আজ সন্ধ্যাতেই সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মমতা, জানা গেল কংগ্রেস এবং তৃণমূল সূত্রে।

Advertisement

সনিয়া গাঁধীর বাসভবন ১০ জনপথেই হবে বৈঠক। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ১০ জনপথে পৌঁছবেন বলে জানা গিয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিজেপির মোকাবিলা করার কৌশল সম্পর্কেই মূলত কথা হবে দুই নেত্রীর মধ্যে।

বিজেপি বিরোধী ঐক্যের লক্ষ্যেই চার দিনের দিল্লি সফরে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ারও অ-বিজেপি জোট গঠনের লক্ষ্যে সক্রিয় হয়েছেন। মঙ্গলবারই মমতা-শরদ বৈঠক হয়েছে। কিন্তু জোটের প্রকৃতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শরদ পওয়ার একমত হতে পারেননি। শরদ চান কংগ্রেসের নেতৃত্বেই ফের জোট হোক অর্থাৎ ইউপিএ-৩ গঠিত হোক। কিন্তু মমতা চাইছেন, কংগ্রেসকে বাদ রেখে ঐক্যবদ্ধ হোক অন্য অ-বিজেপি দলগুলি, কংগ্রেস সেই জোটের পাশে থাকুক।

Advertisement

মঙ্গলবার সংসদে তৃণমূলের সংসদীয় অফিসে গিয়ে বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের প্রত্যেককেই মমতা ওই ধরনের জোটের কথাই বলেছেন বলে খবর।

তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, সনিয়া গাঁধীকে নিয়ে মমতার কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু কংগ্রেসের সভাপতি এখন সনিয়া নন, রাহুল। রাহুলের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কোনও জোটের শরিক হতে মমতা এই মুহূর্তে খুব একটা আগ্রহী নন

মমতার এই অবস্থানের কারণেই কি সনিয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হল না? মঙ্গলবার এমন জল্পনা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। তবে পরে জানা যায়, সনিয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ই নিজের দলের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে কংগ্রেসের সংসদীয় দফতরে পাঠিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু সনিয়া ততক্ষণে বেরিয়ে সংসদ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাই সাক্ষাৎ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু মমতা তাঁর দফতরে দীনেশকে পাঠিয়েছিলেন জেনে মঙ্গলবার রাতেই বার্তা পাঠান সনিয়া। বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: কর্নাটকে মুখ ফস্কে আত্মঘাতী গোল অমিতের

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল গড়লেও গাঁধী পরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভেঙে যায়নি। রাজীব গাঁধীর অত্যন্ত প্রিয়পাত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্র ধরেই সনিয়ার সঙ্গে মমতার রসায়ন বেশ মধুর। জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুতে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে মমতার মতপার্থক্য সামনে এসেছে একাধিক বার। কিন্তু সনিয়া-মমতা সম্পর্কে তার কোনও প্রভাব পড়েনি।

এ বার তা হলে কী হল? মমতা-সনিয়া পরস্পরের মুখোমুখি হলেন না কেন? রাহুলের নেতৃত্বের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন মহলে অনাস্থা ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন বলেই কি দুই নেত্রীর সম্পর্কে শৈত্য চলে এল? মঙ্গলবার এমন নানা প্রশ্ন জন্ম নিতে শুরু করেছিল। কিন্তু পরে সে সব প্রশ্নের অবসান ঘটেছে।

আরও পড়ুন: মোদী চান দ্বিগুণ, মমতা আড়াই পার

১০ জনপথে আজ সন্ধ্যার বৈঠকে দিকে নজর থাকছে গোটা দেশের রাজনৈতিক শিবিরের। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রীর সঙ্গে তৃণমূল চেয়ারপার্সনের বৈঠকে মূল আলোচ্য যে বিজেপি বিরোধী লড়াই, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। সে লড়াইয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূল এক জোটে সামিল না হয়েও কী ভাবে পরস্পরের পাশে দাঁড়াতে পারে, সনিয়া এবং মমতার মধ্যে তা নিয়েই কথা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। তবে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার পরে মমতার অবস্থান বদলে যাবে, তিনি কংগ্রেসের নেতৃত্বে জোটের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবেন, এমনটা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement