বাজার খুলতেই কেনার ধুম, দিলখুশ শ্রীনগরের

গত তিন মাস ধরে বিক্রিবাটা একেবারে বন্ধ। ক্ষতির পরিমাণ নয় নয় করে অন্তত ৬০ কোটি। রবিবার অবশ্য হাসি ফুটেছে সবার মুখে।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৮
Share:

তিন মাস পরে খুলল রবিবারের বাজার। চলছে বেচাকেনা। শ্রীনগরে পিটিআইয়ের ছবি।

গত তিন মাস ধরে বিক্রিবাটা একেবারে বন্ধ। ক্ষতির পরিমাণ নয় নয় করে অন্তত ৬০ কোটি। রবিবার অবশ্য হাসি ফুটেছে সবার মুখে।

Advertisement

বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই সংঘর্ষ-পাথর ছোড়াছুড়ি-পুলিশের ঘনঘন টহল-ছররার আঘাত-কার্ফু— এই সব নিয়ে তিন মাস ধরে অশান্ত ছিল উপত্যকা। দিন কয়েক হল সামান্য একটু হাঁপ ছেড়েছেন বাসিন্দারা। এত দিনের মধ্যে সব চেয়ে ভাল দিনটা বোধহয় রবিবারই। আজ মন খুলে পসরা সাজিয়ে ছিলেন দোকানিরা আর দেদার খুশিতে সে সব কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন আম জনতা।

‘রোববারের বাজার’ নামেই পরিচিত এই বিকিকিনি। প্রতি রবিবার শ্রীনগরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র বেচেন। এখানকার বিশেষত্ব হল, বিদেশি জামাকাপড় ও অন্য নানা সামগ্রী খুব সস্তায় পাওয়া যায়। তাই রবিবারগুলোতে লাল চকের কাছে ট্যুরিস্ট রিসেপশন সেন্টার থেকে হরি সিংহ হাই স্ট্রিট— এই দু’কিলোমিটার জুড়ে ভিড় উপচে পড়ে। কার্ফুর জেরে সে সব লাটে উঠেছিল। আজ বাজার খোলার পরে সকাল থেকেই ভিড়ে ভিড়াক্কার রোববারেরর বাজার। সমাজের সব শ্রেণির মানুষের দেখা মেলে এই চত্বরে। ছুটির দিনে সস্তায় সব কিছু পেয়ে দিলখুশ সবারই।

Advertisement

আব্দুল রজ্জাক নামে এক জন যেমন বললেন, ‘‘শীত আসছে। বদগাম থেকে এখানে এসেছি বাড়ির সবাইকে নিয়ে। তিন মাস কিছু কেনাকাটা হয়নি। যা যা দরকার সব নিচ্ছি আজ।’’ মহম্মদ ইনায়েত নামে আর এক ক্রেতার বক্তব্য, ‘‘পর্দা, জুতো, জ্যাকেট, কম্বল, বাসনপত্র নিয়েছি অনেক কিছুই। আজ প্রচুর ছাড়ও দিয়েছে!’’

ব্র্যান্ডেড জুতো, স্যুট, রেডিমেড পোশাক ইত্যাদি ক্রেতারা আজ পেয়ে গিয়েছেন প্রায় অর্ধেক দামে। এত দিন ধরে বিক্রি বন্ধ। এত ক্ষতি হয়েছে। তবু জলের দরে জিনিস বেচলেন কেন? প্রশ্ন করেছিলাম দোকানিদের। জুতোবিক্রেতা আব্রার আহমেদ বলেছেন, ‘‘এত দিন কিছু বেচতে পারিনি বলেই তো কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে এই দরে সবাইকে জিনিস দিচ্ছি।’’

এই বাজার থেকে প্রতি মাসে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা রোজগার হয় ব্যবসায়ীদের। তিন মাস একটা পয়সাও ঘরে আসেনি। তাই বাজার খুলতেই দরাজ দোকানিরাও। ক্রেতাদের একটাই কথা, আবার যেন পরের রবিবার বাজারে ফিরে আসতে পারেন তাঁরা। কার্ফু যেন আর ভাগ না বসায় এই খুশিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন