কেন্দ্র চাইছে ঠিকই। কিন্তু বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষের অসুবিধের কথা ভেবেই গণবণ্টন ক্যাশলেস বা নগদহীন করতে রাজি নয় রাজ্য সরকার। ‘‘বৃহস্পতিবার দিল্লিতে খাদ্যসচিবদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানকে রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন খাদ্যসচিব অনিল বর্মা। তবে ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু করতে সরকার বদ্ধপরিকর। জুনে তা চালু হয়ে যাবে,’’ শুক্রবার বলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের আট কোটি মানুষ দু’টাকা কেজি দরে চাল পান। ক্যাশলেস কী, তাঁরা জানেনই না। অনেক গ্রামে ব্যাঙ্ক নেই। ব্যাঙ্ক থাকলেও অ্যাকাউন্ট নেই অনেকের। নেই মোবাইলও। তাঁদের ক্যাশলেস ব্যবস্থায় আনা যাবে কী ভাবে?
৯ ডিসেম্বর রাজ্যকে চিঠি দিয়ে রামবিলাস জানান, সরকারি লেনদেনে যত বেশি সম্ভব কার্ড বা ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার চায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তার জন্য ব্যাপক প্রচার ও প্রশিক্ষণ জরুরি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আবেদন, বিষয়টির উপরে যে-হেতু প্রধানমন্ত্রীর দফতর সরাসরি নজরদারি চালাচ্ছে, তাই সেটির রূপায়ণে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী যেন নিজে নজর দেন। কিন্তু নবান্ন যে কেন্দ্রের আবেদন কানে তুলছে না, বৈঠকে রাজ্যের বক্তব্যই তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
দিল্লির বৈঠকে আধার নম্বরের প্রসঙ্গও ওঠে। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যের ৬১ শতাংশ গ্রাহকের ডিজিটাল কার্ডে আধার নম্বর রয়েছে। তবে যাঁদের আধার কার্ড হয়নি, তাঁরা যে গণবণ্টন ব্যবস্থার সুযোগ পাবেন না, তা নয়। কারণ, রেশনে চাল-গম তুলতে আধার কার্ড এখনও আবশ্যিক করেনি কেন্দ্র।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, জুন থেকেই রাজ্যের ২০ হাজার রেশন দোকানে ডিজিটাল কার্ড চালু হয়ে যাবে। রেশন দোকানের মালিকদের এখন সেই প্রশিক্ষণই দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনেক সামগ্রীর খুচরো বিপণন কেন্দ্রে কেনাকাটা করলে জিনিসের নাম, দাম আর ওজন যেমন স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ফর্দে উঠে যায়, ডিজিটাল কার্ড ব্যবহার শুরু হলে রেশন দোকানের ক্রেতারা তেমনই পাবেন।’’ সেই তথ্য শুধু যে গ্রাহকেরাই পাবেন তা নয়, খাদ্য দফতরের মূল অফিসেও সেগুলো সরাসরি পৌঁছে যাবে।