সর্দারের চিনা ছাঁদ নিয়ে চিন্তায় ভাস্কর

গুজরাতে মাথা তুলছে সর্দার বল্লভভাই পটেলের ১৮২ মিটার উঁচু বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। সর্দার সরোবর বাঁধের কাছেই, নর্মদা নদীর উপরে সাধু বেট-এ কংক্রিট, ইস্পাতের কাঠামো তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৮
Share:

গুজরাতে মাথা তুলছে সর্দার বল্লভভাই পটেলের ১৮২ মিটার উঁচু বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’

মুখটা ঠিক সর্দার বল্লভভাই পটেলের মতোই হল তো! আবার চিনাদের মতো মুখের ধাঁচ হয়ে গেল কি না কে জানে!

Advertisement

নিজের চোখে দেখা না পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না প্রবীণ ভাস্কর, রাম ভনজি সুতার।

গুজরাতে মাথা তুলছে সর্দার বল্লভভাই পটেলের ১৮২ মিটার উঁচু বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। সর্দার সরোবর বাঁধের কাছেই, নর্মদা নদীর উপরে সাধু বেট-এ কংক্রিট, ইস্পাতের কাঠামো তৈরি হচ্ছে। তার উপরে চড়ানো হবে ব্রোঞ্জের চাদর। সেটা তৈরি হচ্ছে চিনের নানচাঙে। খবর এসেছে, ‘সর্দারের মূর্তির ৭০ ফুট দীর্ঘ মাথা ও শরীরের উপরের অংশ তৈরি। এসে দেখে যান।’ তাই আগামী সপ্তাহে চিন যাচ্ছেন রাম ভনজি ও তাঁর ছেলে অনিল। নব্বইয়েও টগবগে রাম ভনজি। তিনিই বল্লভভাইয়ের মূর্তির মূল নকশা তৈরি করেছেন। তাঁদের সঙ্গে চিনে যাচ্ছেন গুজরাত সরকারের প্রতিনিধিরাও।

Advertisement

আরও পড়ুন: আফজল পুত্রের সাফল্য, ‘জঙ্গির ছেলে’ তকমা ঘুচবে কি?

কিন্তু সর্দার পটেলের মূর্তিতেও ‘মেড ইন চায়না’ লেখা থাকবে? তা-ও আবার খোদ নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে! যে মোদী এবং তাঁর দল প্রায়শই চিনের মুণ্ডপাত করেন, তাঁর নিজের রাজ্যেই এই! কী লজ্জা, কী লজ্জা! বহু দিন ধরেই বিরোধীরা এ নিয়ে মোদীকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছেন। গুজরাতে প্রচারে গিয়ে তুমুল বিদ্রুপ করে রাহুল গাঁধীও বলেছিলেন, এই মূর্তি চিনে তৈরি হবে কেন? ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কোথায় গেল?

মোদী রা না কাড়লেও আসরে নেমে গুজরাত সরকার বলছে, মূর্তি মোটেই চিনে তৈরি হচ্ছে না। যে সংস্থা মূর্তি তৈরির বরাত পেয়েছে, তারা চিন থেকে শুধু মূর্তির উপরের ব্রোঞ্জের চাদর ঢালাই করিয়ে আনছে। চিনের জিয়াংশি টংক্যুইং সংস্থার আর্ট ফাউন্ড্রিতে সেই ঢালাইয়ের কাজ চলছে। জাহাজে করে সেটা আনা হচ্ছে গুজরাতে। ব্রোঞ্জের টুকরোগুলো মূর্তির উপরে জায়গা মতো বসাতে চিন থেকে সংস্থার কর্মীরা এসে গুজরাতে কাজও করছেন।

প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ আমেরিকার ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’-র দু’গুণ এবং ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো-র যিশুর ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’ মূর্তির পাঁচ গুণ উঁচু হবে। ১৭০০ টনের মূর্তি তৈরির জন্য দেশের সব শ্রমিক-কৃষককে একটি করে লোহার উপকরণ দান করতে বলেছিলেন মোদী।

নয়ডার স্টুডিওয় সর্দারের ৩০ ফুট দীর্ঘ মূর্তি তৈরি করেছেন সুতার। সেটা দেখেই কাজ চলছে চিনের কারখানায়। প্রায় কোমর পর্যন্ত মূর্তি তৈরির কাজ শেষ। এ বার শরীরের উপরের অংশ ও মাথা। মুখটা নিজে দেখে তবেই ‘ছাড়পত্র’ দেবেন খুঁতখুঁতে সুতার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন