প্রবল ঝড়ে শিকড়সুদ্ধ বিরাট গাছ ঘরের উপর পড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হল। মৃতার নাম বিভূতিবালা নাথ। জখম হয়েছেন তাঁর পুত্র সতু নাথ, পুত্রবধূ শিল্পী ও আড়াই বছরের নাতি সৌরভ। আহত তিন জনকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
দুধপাতিল নাথপাড়ায় বিভূতিদেবীদের প্রতিবেশী অলক নাথ জানান, তাঁদের বাড়িতেও গেছ ভেঙে পড়ে। পরিবারের লোকেদের নিয়ে তিনি লোহার আলমারির আড়ালে বসে কোনও রকমে প্রাণ বাঁচান। সেখান থেকেই পাশের বাড়ির আর্তনাদ শুনতে পান তাঁরা। অলকবাবু বলেন, ‘‘সতুদের বাড়ি থেকে হইচই শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু ঝড়ের দরুন বেরনোর উপায় নেই। বুঝতেই পারছিলাম, কোনও অঘটন ঘটে গিয়েছে। কিন্তু কিছুই করতে পারছি না।’’ ঝড় সামান্য থামতেই তাঁরা বেরিয়ে পাশের বাড়ি থেকে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ আর্তনাদ শুনতে পান। কিন্তু দুই বাড়িতে দু’টি গাছ এমন ভাবে ভেঙেছে যে, সোজা পথে তাঁদের পাশের বাড়িতে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কোনও ক্রমে ঘুরপথে তাঁরা পাশের বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ৬৫ বছরের বৃদ্ধার সারা শরীর গাছের তলায় থেঁতলে গিয়েছে। পা ভেঙে তাঁর ছেলে সতু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। আড়াই বছরের শিশুটিও মুখে চোট পেয়েছে। জখম বৃদ্ধার পুত্রবধূও।
জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায় ওই ভেঙে পড়া গাছের জন্যই। সকালে মৃতদেহ বের করতেও কম সমস্যায় পড়তে হয়নি পুলিশকে। দ্রুত গাছ সরানো অসম্ভব বলে পুলিশ ঘর ভেঙে, গর্ত খুঁড়ে বিভূতিদেবীর দেহ বের করে তা ময়না তদন্তে পাঠায়। পুলিশ জানায়, ঘরে গাছ পড়ে কাছাড়ের আলোনির লক্ষ্মীপুরে বীণা বাগতি নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে।
ঝড়ে বধ্বস্ত করিমগঞ্জ। গত রাতে বৈশাখী ঝড়ে জেলায় অসংখ্য ঘর-বাড়ি ভেঙেছে। পাথারকন্দি শিক্ষাখণ্ডের ৯৭৬ নম্বর নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছ ভেঙে পড়ে। করিমগঞ্জ শহরতলির কাটাখালে সমবায় সমিতির কার্যালয়েও গাছ ভেঙে পড়ে। শহর রাত থেকেই বিদ্যুৎহীন।
ঝড় ও বজ্রপাতে গত ১২ ঘণ্টায় অসমের অন্য প্রান্তে পাঁচ মহিলা-সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। জখমের সংখ্যা ২৮। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত রাতের বৃষ্টি ও ঝড়ে তিনসুকিয়া জেলার মার্গারিটায় নামডাং চা বাগানে ১০টি বাড়ি ভেঙে পড়ে। বাড়ি চাপা পড়ে ঘুমের মধ্যেই মারা যান একই পরিবারের চার জন।