পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় কোটাতে ফের আত্মঘাতী হল দুই ছাত্র। তাদের এক জন ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স (এনইইট) পরীক্ষা দিয়েছিল। অন্য জন বি-টেক-এর ছাত্র। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কারণেই দু’জনে আত্মঘাতী হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কোটাতে ছাত্রছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও দেখা গিয়েছে, একের পর এক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে, আর সেই সঙ্গেই কোটাতে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আত্মহত্যার ঘটনা। কারণ একটাই, আশানুরূপ ফল না হওয়া। এ বছর ইতিমধ্যেই আত্মঘাতী হয়েছে সাত জন ছাত্রছাত্রী। গত বছরও ১৮ জন আত্মঘাতী হয়েছিল। রাজস্থানের কোটার এই পরিসংখ্যানই ভাবিয়ে তুলেছে সকলকে। একই জায়গায় একের পর এক এমন ঘটনা ঘটায় বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি তুলছেন মনোবিদদের একাংশ।
কোটায় কোচিং সেন্টারগুলিতে প্রায় দেড় লাখ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, কোটার জেলাশাসক রবিকুমার সুরপুর সেই ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মাকে চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছেন। জেলাশাসক ওই চিঠিতে তাঁদের পরামর্শ দিয়েছেন, নিজেদের ইচ্ছে সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
মনোবিদ মোহিত রণদীপের মতে, আত্মহত্যা একটা সংক্রামক ব্যাপার। একটি আত্মহত্যার ঘটনা অনেককে উদ্দীপিত করে। একটা ঘটনা আর একটা ঘটনাকে ডেকে আনে। তাঁর কথায়, ‘‘কোটাতে একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা আলাদা করে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করা উচিত। আর অবহেলা করার কোনও মানে হয় না! বিভিন্ন কোচিং সেন্টার মিলিয়ে ওখানে প্রায় দেড় লাখ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। প্রয়োজনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নিউরো-সায়েন্সেস (নিমহান্স)-এর সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে।’’
আরও পড়তে
আইআইটিতে চান্স পেয়েও নম্বরে অখুশি, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী ছাত্রী
আইআইটিতে চান্স পেয়েও র্যাঙ্কিং নিয়ে অখুশি গত মাসের শেষের দিকে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক ছাত্রী। গাজিয়াবাদের ওই ছাত্রী কীর্তি তিওয়ারির পর এনইইটি পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় আত্মঘাতী হল কেশব মীনা নামে এক ছাত্র। তার বয়সও ১৭। রবিবার সকালে হস্টেলের ঘরে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কোটাতেই গত তিন বছর ধরে একটি কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করত সে। পুলিশ জানিয়েছে, গত ১ মে ওই পরীক্ষায় বসেছিল হরিনগরের এক চাষি পরিবারের ছেলে কেশব। কীর্তির মতো কোনও সুইসাইড নোট সে লিখে রেখে যায়নি। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, সম্ভবত পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কারণেই আত্মঘাতী হয়েছে ওই ছাত্র। পাশাপাশি, শনিবার রাতেই হস্টেলের ঘরে বিষ খায় অন্য এক ছাত্র। বি-টেক-এর ওই ছাত্রকে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।